বিজেপিকে 'খ্রিষ্ঠান বিরোধী' দল আখ্যা দিয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়েছিল কনরাড সাংমার ন্যাশনাল পিপলস পার্টি। শেষদিন পর্যন্ত বিজেপি-এনপিপি সরকারের জোট অটুট থাকলেও নির্বাচনী ময়দানে একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি থামেনি দুই দলের। আসন বণ্টন নিয়ে মতানৈক্য হওয়ায় একলাই লড়ে দু'টি দল। মেগালয়ের ৬০টি আশনের সবকটিতেই প্রার্থী দিয়ে এনপিপিকে চাপে ফেলার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। সাংমার খাস তালুক তুরায় এসে প্রচার করে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। তবে শেষ পর্যন্ত বিজেপির ঝুলিতে আসে মাত্র ২টি আসন। অপরদিকে একক বৃহত্তম দল হিসেবে কনরাড সাংমার এনপিপি পায় ২৬টি আসন। এই আবহে সেই পুরনো ফর্মুলাতেই সরকার গঠিত হতে চলেছে মেঘালয়ে। বিজেপি ইতিমধ্যেই তাদের দুই বিধায়কের সমর্থন পত্র কনরাড সাংমাকে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেই চিঠি পেয়ে নিজের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কনরাডও।
ফলাফল যাই হোক, শেষ পর্যন্ত যে এনপিপি এবং বিজেপি ফের একবার জোট গড়বে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল বুথ ফেরত সমীক্ষা প্রকাশের পরই। গুয়াহাটিতে গিয়ে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন কনরাড সাংমা। জল্পনা তখন থেকেই ছিল। কাল রাতের দিকে সেই জল্পনায় শিলমোহর পড়ে। এই রাজ্যে ১৯৭২ সাল (প্রথম বিধানসভা নির্বাচন) থেকে কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে এবার কনরাড সাংমার দল তার খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। তবে ম্যাজিক ফিগার থেকে বেশ কিছুটা দূরেই থামতে হয় কনরাডকে। এই আবহে সরকার গঠন করতে হলে বাকিদের সাহায্য প্রয়োজন পড়বেই কনরাডের।
এই আবহে দতকাল সন্ধ্যায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি আর্নেস্ট মাওরি জানিয়ে দেন, দিল্লি থেকে জেপি নড্ডার নির্দেশ অনুযায়ী তারা রাজ্যে এনপিপিকে সরকার গঠনে সাহায্য করবে। উল্লেখ্য, এই আর্নেস্ট মাওরি নিজেও ভোটে জিততে পারেননি। খ্রিষ্ঠান বিরোধী তকমা মুছে ফেলতে ভোটের আগে তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি গোমাংস খান। তবে তাতেও ইভিএম-এ কোনও প্রভাব পড়েনি। এদিকে বিজেপির সমর্থন পেলেও ম্যাজিক ফিগার থেকে এখনও ৩ ধাপ দূরে রয়েছে এনপিপি। এই বিষয়ে আর্নেস্টকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, গত সরকারের (মেঘালয় ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) সব দল ফের এবার একজোট হবে বলে তিনি আশা করছেন। প্রসঙ্গত, গতবার এমডিএ-তে ছিল ইউডিপি, পিডিএফ, হিলস স্টেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। এবার ইউডিপির ঝুলিতে গিয়েছে ১১টি আসন। তাছাড়া পিডিএফ এবং হিলস স্টেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পেয়েছে ২টি করে আসন। তবে সব দল যদি ফের একবার জোটবদ্ধ হয় তাহলে সরকার গঠন নিশ্চিত।