লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ভারতীয় রাজনীতিতে এই মূহূর্তে সব থেকে আলোচিত নাম নীতীশ কুমার। লোকসভা নির্বাচনের পর নীতীশ তুমি কার? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতীয় রাজনীতিতে। জেডিইউ যে বিজেপির দিকেই ঝুঁকে সেকথা বলাই বাহুল্য। তবে নীতীশ কুমার বরাবরই রাজনীতিতে তাঁর এবং তাঁর দলের স্বার্থ ছাড়া কোনও কিছুই করেননা। আর হাতি গর্তে পড়েছে, এবার তো ব্যাঙে যা করার তাই করবে। বিজেপি ব্যাকফুটে যেতেই পালটা তাঁদের সঙ্গে এবার দর কষাকষি শুরু করে দিলেন নীতীশ কুমার। নরেন্দ্র মোদীকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে আনতে, পাল্টা নীতীশ দাবি করতে চলেছেন ৪জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ।
আরও পড়ুন-টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ডের এই ৫ ক্রিকেটারকে চিনে নিন…
জনতা দল ইউনাইটেডের হাতে রয়েছে ১২জন সাংসদ। অন্ধ্র প্রদেশের টিডিপিও সমর্থন দিতে চলেছে বিজেপিকে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করতে চলেছেন নীতীশ কুমার। শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ অর্থ বাড়ানোর জন্য দাবি জানাবেন তিনি, চাইবেন চার ক্যাবিনেট মন্ত্রক। তাতেই শেষ নয়, পাশাপাশি বিহারে দ্রুত নির্বাচনেরও দাবি জানাতে চলেছেন তিনি। এবার নীতীশ কুমার যদি ১২টি আসনের জন্য এত কিছু চান, সেক্ষেত্রে চন্দ্রবাবু নাইডুও যে বসে থাকবেন না, তা বলাই বাহুল্য। নির্বাচনের আগেই অবশ্য জেডিইউকে জানানো হয়েছিল, তাঁদের তিনটি ক্যাবিনেট মন্ত্রক এবং একটি রাষ্ট্রমন্ত্রী দেওয়া হবে, এক্ষেত্রে আরও একটি রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ জেডিইউ বাড়াতে চাইছে, পাশাপাশি চারটি ক্যাবিনেট মন্ত্রক চাইছে।
নীতীশ কুমারের দলের এক শীর্ষনেতা জানিয়েছেন, রেলমন্ত্রক, জলসম্পদ মন্ত্রক, গ্রামোন্নয়নের মতো মন্ত্রক তারা চান, যাতে রাজ্যের জন্য উন্নতি করতে পারেন তাঁরা। গত ১৮ বছরে নীতীশ কুমারের সরকার ভালো উন্নতির চেষ্টা চলেছে বিহারে, সেই উন্নয়ন জারি রাখতেই এতগুলো মন্ত্রক চাইতে চলেছেন তাঁরা। পাশাপাশি লোকসভা ভোটে বিহারে জেডিইউ এবং বিজেপির জোটের ভালো ফলের পর নীতীশ কুমার চাইছেন, এই হাওয়াকে কাজে লাগিয়েই দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন সেখানে করতে, যাতে জয়ের ব্যাপারে অনেকটা এগিয়ে থাকতে পারেন তাঁরা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে নীতীশ কুমার আরজেডির হাত ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে ফের বিহারে সরকার গঠন করেছিলেন। এরপর থেকেই সেখানে দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরব হয়েছে এনডিএ জোটের শরীক দলগুলো। তবে ২০২৫ সালে নভেম্বরে বিহারের বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন-বুমরাহ বুমরাহ করে লাফিয়ে লাভ নেই, ওকে সাপোর্ট দেবে কে? বড় প্রশ্ন অজি কিংবদন্তির
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আরও একটা দাবি করতে চলেছে বিজেপির থেকে, তা হল আর্থিক বরাদ্দ রাজ্যের জন্য বৃদ্ধি করা। সেরাজ্যে ৯৪ লক্ষ গরিব পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জেডিইউ, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে যাতে সমস্যা না হয়, তাই আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করতে চলেছেন তাঁরা। আগামী পাঁচ বছরের জন্য ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা বিহার সরকার, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর পরিবাররে জন্য বরাদ্দ করেছে। সেই অর্থের জোগানে যাতে টান না পড়ে এবং রাজ্যের পিছিয়ে পড়া মানুষ যাতে পর্যাপ্ত সাহায্য পান, সেই লক্ষ্যই অনড় জেডিইউ। বিহারকে যাতে বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হয় উন্নয়নের জন্য, সেই আবেদনও করতে চলেছে নীতীশ কুমারের দল, কারণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই দর কষাকষিতে এগিয়ে থাকতে পারলে অনেকটাই স্বস্তিতে থাকবে জেডিইউ।