কোনও জোট বা আসন সমঝোতা নয় ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে একাই লড়বে তিপ্রা মথা। দলের প্রধান প্রদ্যুৎকিশোর দেববর্মন শুক্রবার সমাজ মাধ্যমে এই ঘোষণা করলেন। নির্বাচনে বিজেপি বা বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে জাতিসত্তার দাবিতে আন্দোলনরত দল তিপ্রা মথার যাওয়া নিয়ে যে জল্পনা চলছিল তাতে জল ঢেলে দিলেন দলের প্রধান নিজে।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার জনসংখ্যা এক তৃতীয়ংশ এই জাতিগোষ্ঠী। রাজ্যের মোট ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২০টিতে জেতার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের। গত কয়েক বছরে বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের মতো রাজ্যের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে তিপ্রা মথা। তাদের প্রধান দাবি পৃথক তিপ্রাল্যান্ড। এই দাবিকে সামনে রেখে বিধানসভা নির্বাচনে প্রচার চালাচ্ছে তারা।
সমাজ মাধ্যমে এক বার্তায় দেববর্মন বলেন, কোনও রাজনৈতিক দলই তাদের এই দাবি পূরণের রাজি হয়নি। সে কারণে তারা একলা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি লাইভে বলেন, 'যত ক্ষণ না আমাদের দাবির সপক্ষে কোনও সংবিধানিক সমাধান সূত্র না দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ আমরা কোনও জোটে যাব না।'
গত সপ্তাহে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে বৈঠক করেন দেববর্মন। তার পর থেকে জল্পনা শুরু হয় বিজেপির সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়বেন তাঁরা। এর পাশাপাশি জানা যায় কংগ্রেস ও সিপিএমের সঙ্গে তাঁর আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে শুক্রবার তিপ্রা মথা প্রধান জানিয়ে দিলেন, তারা কোনও জোটে যাচ্ছেন না।
তিনি বলেন,'আমি আগেও বলেছি। আবারও বলছি, দাবি নিয়ে কোনও অপোষ করব না আমরা। আমি দিল্লি গিয়ে সব দলের আলাপ-আলোচনা শুনেছি। কথা বলেছি। কিন্তু কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি কেউ দেননি। তাই কোনও জোট হচ্ছে না। আমরা নিজেদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করব।' সূত্রের খবর, ২০ থেকে ৩০টি আসনে প্রার্থী দিতে পারে তিপ্রা মথা।
তবে তিপ্রা মথা যদি এককভাবে লড়াই করে, তবে সবদলই চাপে পড়বে। গত ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসনের মধ্যে ৩৬টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। তাদের জোট সঙ্গী ইন্ডিজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (আইপিএফটি) পেয়েছিল আটটি আসন। ত্রিপুরায় নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসতে ৩০টি আসনের প্রয়োজন। এই সংখ্যক আসন যদি বিজেপি না পায় তবে তার আইপিএফটি-র সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এবার আইপিএফটি কোনও আসন নাও পেতে পারে। কারণ সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে তিপ্রা মথা। ফলে এবারে বিজেপির লড়াই বেশ কঠিন। একই রকম ভাবে চাপ বাড়ল বাম-কংগ্রেস জোটেরও। কারণ তারাও আশা করেছিল তাদের সঙ্গে জোটে আসতে পারে জাতিগোষ্ঠীর দলটি।প্রসঙ্গত, তৃণমূলও চেষ্টা চালায় তিপ্রা মথার সঙ্গে জোট করার।