রাত পোহালেই সিতাই বিধানসভা উপনির্বাচন। নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালডাংরা, সিতাই ও মাদারিহাটে উপনির্বাচন। সেই উপনির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণ হয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সব মহল। তার সঙ্গে এবার এই উপনির্বাচনে দুটি বিষয় অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
একটি বিষয় হল এবার আরজি করের ঘটনার কোনও প্রভাব উপনির্বাচনের ভোটে পড়ে কি না। আর অপরদিকটি হল লোকসভা ভোটের পরে উত্তরবঙ্গে শাসকদল তৃণমূল ও বিরোধী বিজেপির অবস্থানটা ঠিক কেমন?
কোচবিহারের সিতাই কেন্দ্রটির প্রতি নজর রয়েছে এবার অনেকেরই। গতবারের বিধানসভা ভোটে এই সিতাই কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতেছিলেন জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। তবে বর্তমানে তিনি কোচবিহারের সাংসদ। তার জেরে এই কেন্দ্রতে উপনির্বাচন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই কেন্দ্রে জগদীশের স্ত্রী সঙ্গীতা রায়কে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
সব মিলিয়ে এই কেন্দ্রে এবার প্রার্থী সংখ্য়া ৭জন। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই কেন্দ্রে আসল লড়াই তো তৃণমূল বনাম বিজেপির। একসময় দিনহাটা লাগোয়া এই সিতাই কেন্দ্র ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের দুর্ভেদ্য গড়। পরবর্তী সময় সেখানেই ভিত মজবুত করে তৃণমূল। এমনকী ২০২১ সালে যখন গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে গেরুয়া ঝড় তখনও সিতাই বিধানসভায় ফুটেছিল ঘাসফুল।
এরপর এল লোকসভা ভোট। সিতাই নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় ছিল গেরুয়া শিবির। এই সিতাইয়ের তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার উপর ভরসা করেছিল তৃণমূল। আর ফলাফল বের হতে দেখা গেল তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক পরাজিত হলেন জগদীশের কাছে। সব মিলিয়ে ৩৯ হাজার ২৫০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন নিশীথ। আর ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছিল গত লোকসভা ভোটে এই সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল ২৮ হাজার ৩৭৭ ভোটের লিড পেয়েছে।
সিতাই মানেই জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। সেই ২০১৬ সাল থেকে পরপর তিনবার তিনি বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। এখন আবার ঘাসফুলের টিকিটে তিনিই সাংসদ। অনেকে বলেন, নামেই তাঁর স্ত্রী লড়তে নেমেছেন। আসল লড়াইতে তো নেমেছেন জগদীশ। আর বিপক্ষে আসল লড়াই তো নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের মতে, এবার সীমান্ত লাগোয়া এই বিধানসভা উপনির্বাচন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকেরও অগ্নিপরীক্ষা। এখানকার বিজেপি প্রার্থী দীপক কুমার রায়। ভাবমূর্তি স্বচ্ছ হলেও এই কেন্দ্রে বিজেপির মূল অন্তরায় হল সাংগঠনিক দুর্বলতা। আর তৃণমূলের কাছে মূল উদ্বেগের বিষয় হল অন্তর্ঘাত ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তবে সম্প্রতি তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে ঘাসফুল শিবির।
ভোটার সংখ্যা
এখানকার ভোটার সংখ্যাঃ ৩ লক্ষ ৫ হাজার ৫০০জন।
পুরুষ ভোটারঃ ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪২১জন
মহিলা ভোটারঃ ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭৯জন
এখানে ১৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।