তিপ্রা মোথা নিয়ে ত্রিপুরায় টানাটানি শুরু হয় আজ সকাল থেকে। ভোটের ফলাফল প্রকাশ হতেই বোঝা যায় যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সাক্ষী থাকতে চলেছে ত্রিপুরা। টিলার রাজ্যে বিজেপি কখনও ম্যাজিক ফিগার পার করেছে, আবার কখনও পিছিয়ে পড়েছে। এবার বাম-কংগ্রেস জোট বিজেপিকে কড়া টক্কর দেওয়ার ধারের কাছে নেই। এই আবহে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে তিপ্রা মোথা। জানা যায়, বাম-কংগ্রেস ইতিমধ্যেই তিপ্রা মোথার প্রধানের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করে। এদিকে বিজেপিও এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। (ত্রিপুরা নির্বাচনের যাবতীয় লাইভ আপডেট)
ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর ট্রেন্ড বোঝা যেতেই বিজেপির মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, 'আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি রাজ্যে পরবর্তী সরকার গঠন করব আমরাই। দুই কেন্দ্রীয় নেতা - ফণীন্দ্রনাথ শর্মা এবং সম্বিত পাত্র পরিস্থিতির তদারকি করতে এখানে আছেন। আশা করা যায়, আরও কেন্দ্রীয় নেতারা আজ আসবেন।' এদিকে তিপ্রা মোথার সঙ্গে জোট গড়া প্রসঙ্গে বিজেপি মুখপাত্র বলেন, 'গ্রেটার টিপরাল্যান্ড বাদে বিজেপি তাদের সব দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত।' এদিকে 'কিংমেকার' হওয়ার ইঙ্গিত মিলতেই কড়া বার্তা দেয় তিপ্রা মোথা। ‘মূল্যবোধ নিয়ে কোনও আপস করা হবে না’ বলে জানিয়ে দেন প্রদ্যোৎ মাণিক্য দেববর্মা।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ত্রিপুরায় রেকর্ড গড়ে বামফ্রন্টকে তাদের ঘাঁটি থেকে উচ্ছেদ করেছিল বিজেপি। চলতি নির্বাচনে অবশ্য বাম ও কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে। বিজেপিকে হারাতে বিগত পাঁচ দশকের শত্রুতা ভুলেছে বাম এবং কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গ মডেলেই এই প্রথম ত্রিপুরায় বাম ও কংগ্রেস জোট করে ভোটে লড়ছে। এরই মধ্যে আজ সকাল থেকে বিজেপিকে কঠিন লড়াই দিতে শুরু করে ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজপরিবারের সদস্য প্রদ্যোৎ দেববর্মার নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক দল তিপ্রা মোথা। প্রদ্যোতের দল ৪২টি আসনে এককভাবে প্রার্থী দিয়েছে। তবে প্রদ্যোৎ নিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। বৃহত্তর তিপরাল্যান্ডের সাংবিধানিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা অন্য কোনও দলের সঙ্গে সমঝোতা করবে না বলে জানিয়েছেন প্রদ্যোৎ। কয়েকদিন আগেই প্রদ্যোৎ দিল্লিতে গিয়ে বিজেপির 'চাণক্য' অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। তখন একবার জোট নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে সেই জল্পনা উড়িয়ে দেন তিপ্রা প্রধান।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার আদিবাসী অধ্যুষিত অন্তত ২০টি বিধানসভা আসনে তিপ্রা মোথা খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। গতবার এই আসনগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটিতেই জয় পেয়েছিল বিজেপির জোটসঙ্গী আইপিএফটি। তবে এবার তিপ্রা মোথা এই আসনগুলিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছে। এর ফলে এই ২০ আসনই শেষ পর্যন্ত ফলাফলের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তিপ্রা। এদিকে বিরোধী ভোট কাটাকাটির ফলে অনেককটি আসনে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। এই আবহে শেষ পর্যন্ত বিজেপি ৩১টি আসন না পেলে তিপ্রার সঙ্গে জোট হয় কি না, তে দেখার বিষয়।