২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর এরাজ্যে প্রচুর জায়গা থেকে হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। হিংসার জেরে বহু মানুষকে ভিনরাজ্যে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। খুন হয়েছিলেন অনেকেই। একাধির ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। সেই সব ঘটনার তদন্ত আজও চলছে। সেই সময় থেকেই বিরোধী বিজেপি এই ইস্যুটিকে হাতিয়ার করে শাসক দল তৃণমূলকে তোপ দেগে এসেছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির ভোটের উদাহরণ তুলে ধরে বাংলায় 'তৃণমূলের হিংসার সংস্কৃতি'র নিন্দা করে গেরুয়া শিবির। তবে কতকটা পশ্চিমবঙ্গের মতোই ত্রিপুরাতেও নির্বাচনের দিন দেখা গেল বিক্ষিপ্ত হিংসা। একাধিক ঘটনায় প্রায় ৩০ জনের মতো গ্রেফতারও হয় ভোটগ্রহণের দিন। এই আবহে ফল প্রকাশের পর যাতে নতুন করে রাজনৈতিক হিংসা না ছড়িয়ে পড়ে, এর জন্য তৎপর নির্বাচন কমিশন। আর তাই বিভিন্ন জায়গায় 'শান্তি সভা' আয়োজিত করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। (আরও পড়ুন: প্রেমই হল কাল, অসমে মহিলা খুনে ধৃত সেনার কর্নেল! সূত্র মিলল হাওড়ার প্ল্যাটফর্মে)
জানা গিয়েছে, আগামী ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় 'শান্তি সভা' অনুষ্ঠিত করবে নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন বিধানসভার কেন্দ্রের একাধির পোলিং স্টেশনের কাছেই অনুষ্ঠিত হবে এই সভা। এলাকার মানুষজন, বিশিষ্ট ব্যক্তি, সাংবাদিকদের তাতে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হবে জানান মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিট্টে। এই বৈঠকগুলি শেষ হবে 'আমরা অহিংসার পক্ষে, আমরা শান্তির পক্ষে' স্লোগান দিয়ে। গত কয়েকদিনে ত্রিপুরার মুখ্যসচিব জেকে সিনহা, পুলিশের ডিজি অমিতাভ রঞ্জন এবং মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ভোটগণনা প্রক্রিয়া নিয়ে পরপর বৈঠক করেছেন। এরপর এই 'শান্তি সভা' আয়োজনের ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় নির্বাচনের আগে থেকেই 'অহিংস' ভোটগ্রহণ করতে তৎপর ছিল কমিশন। তবে ভোটের দিন বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটে এবং শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি শাসকদল অভিযোগের আঙুল তোলে তিপ্রা মথার দিকেও। এরই মাঝে অবশ্য ৮৭ শতাংশ ভোট পড়ে ত্রিপুরার নির্বাচনে। এদিকে রাজ্য জুড়ে ২২টি হিংসার মামলা রুজু হয় ভোটগ্রহণের দিন। বিভিন্ন ঘটনায় ২০ জন জখম হয়েছেন। এই আবহে ফল প্রকাশের দিন যাতে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, এর জন্য নির্বাচন কমিশন আগামী ২ মার্চ (ভোটগণনার দিন) রাজ্যের ২১টি জায়গায় বিপুল সংখ্য নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করবে। জানা গিয়েছে, এই নিরাপত্তা হবে ত্রিস্তরীয়। ত্রিপুরা পুলিশ, ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে এই নিরাপত্তা বলয়তে।