কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয়ের পরে কার্যত এবার বিরোধী জোট তৈরি নিয়ে নতুন রকম ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আর আগের অবস্থান থেকে বেমালুম ঘুরে গিয়ে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে জোট করার পক্ষে সায় দিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে তৃণমূল নেত্রীর এই আহ্বান শুনে জাতীয় রাজনীতিতে হতবাক অনেকেই। জেডিইউ নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই কংগ্রেস সম্পর্কে সুর নরম করেছেন মমতা।
সূত্রের খবর, কিছুদিন আগেও কংগ্রেসকে ছাড়া জোটের পক্ষে সায় দিচ্ছিলেন মমতা। আর এখন কংগ্রেস কর্ণাটক দখল করে বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় ক্ষেত্রে তাদের শক্তির পরীক্ষায় উতরে যেতেই এখন কংগ্রেসকে নিয়ে জোটের পক্ষে সওয়াল করছেন মমতা। নীতীশ কুমারের সঙ্গে মিটিংয়ে তিনি এব্যাপারে মতামত দিয়েছেন বলে খবর। মমতা এনিয়ে নীতীশের কাছে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বলে খবর।
এদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নীতীশ কুমারের ফর্মুলা ছিল জাতীয় ক্ষেত্রে বিজেপির বিরুদ্ধে যেন একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়া হয়। অর্থাৎ ভোট কাটাকুটির সুবিধা যাতে বিজেপি না পায় সেকারণেই এই নয়া ফর্মুলা। এদিকে এবার কংগ্রেসকে নিয়ে জোট করার ব্যাপারে পটনায় মিটিং ডাকার ব্যাপারে মমতা মতামত দিয়েছেন বলে খবর।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সম্প্রতি তৃণমূলের সর্বভারতীয় তকমা চলে গিয়ে। অন্য়দিকে কর্ণাটকের যুদ্ধে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইতে কংগ্রেস যে আজও প্রাসঙ্গিক তা ফের একবার প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। এদিকে কিছুদিন আগেও কংগ্রেসের সঙ্গে একসঙ্গে জোট করার ক্ষেত্রে আপত্তি ছিল তৃণমূলের। কংগ্রেসকে ছাড়া জোট করার ব্যাপারে তিনি একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করেছিলেন। কিন্তু কর্ণাটকে কংগ্রেস জয়ী হতেই তৃণমূল কার্যত বুঝে গিয়েছে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে সর্বভারতীয় স্তরে জোট করে আখেরে লাভ কিছু হবে না। সেকারণে পরিস্থিতি অন্যরকম টের পেয়েই এবার ভোল বদলের চেষ্টা তৃণমূলের।
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি জানিয়েছেন, যেখানে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী সেখানেই বিজেপি লড়তে পারছে না। কর্ণাটকের রায় বিজেপির বিরুদ্ধে রায়। সেখানকার অর্থনীতি একেবারে ভেঙে গিয়েছিল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যারা যেখানে শক্তিশালী তারা সেখানে লড়াই করবে। বাংলায় আমরা শক্তিশালী, দিল্লিতে আপ, বিহারে নীতীশজী, তেজস্বী যাদব তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি তাদের ফর্মুলা নিয়ে সিদ্ধান্ত দেব না। তবে শক্তিশালী দলকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যেখানে কংগ্রেসের হাতে ২০০ আসন বা সেরকম কিছু রয়েছে তাদের লড়াই করতে দিন। আমরা তাদের সমর্থন করব। যদি আপনারা ভালো কিছু চান তবে কিছুক্ষেত্রে আপনাদের স্বার্থত্যাগ করতেই হবে।