ভোটের দিন ঘোষণার আগেই পশ্চিমবঙ্গে আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামীকাল অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হচ্ছে বাংলায়। মূলত সিআরপিএফ জওয়ানরাই থাকছে এই বাহিনীতে। এর মধ্যে ৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কলকাতা (চিৎপুর) স্টেশনে এসে নামবে এবং বাকি ৩ কোম্পানি বাহিনী নামবে বর্ধমান স্টেশনে।
ব্যারাকপুর, বিধাননগর, বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর— এই ১০ জেলায় অবস্থান করবেন এই ১২ কোম্পানি বাহিনীর জওয়ানরা। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাজ্যে আরও ১২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে চলেছে। ধাপে ধাপে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঢুকতে শুরু করবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
সূত্রের খবর, ভোটমুখী বাংলায় পাঠানো কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে থাকছে সিআরপিএফ, সিআইএসএফ, বিএসএফ। থাকবে এসএসবি, আইটিবিপি–র জওয়ানরাও। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে থেকেই রাজ্যে নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় টহলদারি করবেন জওয়ানরা। আর ভোট ঘোষণা হলেই তাঁদের হাতেই চলে যাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব।
উল্লেখ্য, এর আগে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা যায় যে এবার বিধানসভা নির্বাচনে ১০০০ কোম্পানি বা তার থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে পারে পশ্চিমবঙ্গে। গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে এসেছিল ৭৪৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ ২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে পোলিং বুথের সংখ্যা ছিল ৭৮ হাজার ৯০৩। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যে ভোট হওয়ার জেরে বুথের সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৯০টি। এই বিপুল পরিমাণ বুথ বৃদ্ধির জেরেই ১০০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যে এসেছিল নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। রাজ্য পুলিশ–প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক, রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা ও অন্যরা। বৈঠকে বারবার উঠে এসেছে বাংলার রাজনৈতিক হিংসা, খুনোখুনির ঘটনার প্রসঙ্গ। তাই অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যেই রাজ্যে আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করতে চাইছে কমিশন।
পাশাপাশি ভোটের কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও পুর কর্মীদের পর এবার রাজ্য সরকারের অন্যান্য কর্মীদের দ্রুত করোনা টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে চলেছে রাজ্য। কারণ, ভোটের কাজে যুক্ত থাকবেন রাজ্যের প্রায় সাড়ে চার লক্ষ সরকারি কর্মী। শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সে জেলাশাসকদের এমনই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, জানা গিয়েছে, ৫ মে–র আগে রাজ্যে ভোট মিটিয়ে ফেলতে চাইছে কমিশন৷ করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ৬ থেকে ৭ দফায় নির্বাচন করানোর পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।