একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়টি অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। প্রথম দফার মাত্র ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য এখনও পর্যন্ত ৭০৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে আসতে চলেছে বলে খবর। প্রতি দফায় সাতশোর বেশি কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে কমিশন। এটাকে একেবারে নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এবার নির্বাচনে প্রথম দফায় মোট ৩০ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য মোতায়েন করা হচ্ছে ৭০৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। অর্থাৎ দশ হাজার বুথের জন্য সত্তর হাজার বাহিনী। এটি একটি নয়া রেকর্ড। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে গোটা রাজ্যে এসেছিল ৭২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। আর ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে এসেছিলে ৭৪৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এবারের ভোটে মাত্র একটি দফা অর্থাৎ ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রের ১০,২৮৮টি বুথের জন্য আসছে ৭০৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। আরও বেশি পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে পারে বলে কমিশন মনে করছে।
জানা গিয়েছে, আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে রাজ্যে চলে আসছে আরও ২০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ২৭ মার্চ প্রথম দফার ভোট। তার আগেই ওই সংখ্যা দাঁড়াবে ৭০৫। শুক্রবার দিল্লি থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বার্তা পাঠানো হয় যে, আরও ২১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে। ফলে মোট কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে ৭০৫ কোম্পানি। ভোটের উত্তাপ ও দফা বাড়লে কেন্দ্রীয় বাহিনীরও সংখ্যা বাড়বে। অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাবে।
এবার নির্বাচনে ভোটগ্রহণের উপরে কড়া নজর রাখতে রাজ্যের অধিকাংশ বুথকেই স্পর্শকাতর হিসেবে দেখার চেষ্টা করছে কমিশন। সব বুথেই সম্ভবত মোতায়েন করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী নয় বাড়তে চলেছে পর্যবেক্ষকদের সংখ্যাও। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১৬০ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক এসেছিলেন। এবার আসছেন ২০৯ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক। যাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন রাজ্যে চলে আসবেন। পুলিশ পর্যবেক্ষক এসেছিলের ৩১ জন। এবার আসবেন ৫৫ জন। ব্যয় সংক্রান্ত পর্যবেক্ষক গত বিধানসভা নির্বাচনে এসেছিলেন ৭০ জন। এবার তার সংখ্যা বাড়বে বলে সূত্রের খবর।
আগামী ১৫ মার্চ পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিশেষ পর্যবেক্ষকরা। আজ তাঁরা বৈঠক করেন পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের জেলাশাসকদের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী–সহ ভিভিআইপিদের প্রচারের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার কী করে করা যায় তার জন্য ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কমিশন। প্রয়োজনে তাঁদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করারও পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। নন্দীগ্রামের ঘটনার জেলাশাসক–পুলিশ সুপারের যুগ্মভাবে পাঠানো রিপোর্ট কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে পাঠান মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। একইরকম রিপোর্ট পাঠান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যে আসা দুই বিশেষ পর্যবেক্ষক।