দেশে করোনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। মোদীর বিরুদ্ধে হাসপাতাল না গড়ে কোটি কোটি টাকা ব্যায় করে ফুর্তির অভিযোগ তুললেন অভিষেক। বিমান কেনা নিয়েও মোদীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।
এছাড়াও কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সংসদ ভবন, দলীয় কার্যালয়ে নির্মাণ নিয়েও মোদীকে কাঠগড়ায় তোলেন অভিষেক। ওই টাকায় কতগুলি হাসপাতাল হতে পারত, তারও পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি বিজেপিকে লক্ষ্য করে তাঁর কটাক্ষ, মন্দির—মসজিদের রাজনীতি ছাড়া দেশের উন্নয়নের কোনও কাজ করেনি বিজেপি। তাঁর অভিযোগ, যা টাকা ওই বিমান কিনতে, সংসদভবন ও দলীয় কার্য়ালয়ে তৈরি করতে ব্যায় হয়েছে, সেই টাকা দিয়ে অনায়াসেই হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়া যেত। তাহলে দেশে এই ভয়ঙ্কর সঙ্কট দেখা দিত না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। পাশাপাশি বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেকের বক্তব্য, মন্দির—মসজিদের রাজনীতি ছাড়া দেশের উন্নয়নের কোনও কাজ করেনি বিজেপি।
রবিবার বনগাঁ উত্তরে যান তিনি। সেখানে পৌঁছে এক জনসভায় যোগ দেন অভিষেক। সেখান থেকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘ প্রত্যেকদিন মৃত্যুমিছিল বার হচ্ছে উত্তরপ্রদেশ—গুজরাতে। কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে সেখানকার শ্মশানে দেহ দাহ করার পর্যন্ত জায়গা নেই। লাইন দিয়ে অ্যম্বুল্যান্সগুলো দেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’ এরপর বিজেপিকে তুলোধনা করে তিনি বলেন, ‘ পাঁচ—দশ বছর ক্ষমতায় থাকার সত্ত্বেও কোনও উন্নয়ন না—করে, শুধু মন্দির—মসজিদ নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছে।’ তারপর রাজ্যের খতিয়ান তুলে তিনি বলেন, ‘ আর এখানে ব্লকে ব্লকে, বিধানসভায় মাল্টি সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকারণে গুজরাতের হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা ২০ হাজার আর বাংলায় সেই সংখ্যা ১ লক্ষের উপর।’
এর পরেই দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, ‘আমার আপনার করের টাকা দিয়ে নিজের জন্য বিমান কিনেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিমান কিনতে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে কেন্দ্রের। ওই টাকায় ক’টা হাসপাতাল গড়া যেত জানেন? ১০০টা। প্রত্যেকটিতে ১০০টা করে শয্যা হলে, ১০ হাজার শয্যা বাড়ত।’
এরপর দিল্লির সংসদ ভবন নির্মাণ নিয়েও মোদীকে তীব্র কটাক্ষ করেন অভিষেক। বলেন, ‘ দিল্লিতে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদভবন বানাচ্ছেন। সেই টাকায় ২০০টা হাসপাতাল হতে পারত। সেক্ষেত্রে আরও ২০ হাজার শয্যা বাড়ত। তা না করে নিজের প্রচার ব্যায় করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমার আপনার করের টাকায় ফুর্তি করে ১৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করে দিল্লিতে দলের কার্যালয় তৈরি করেছেন তিনি। তা হলে আপনারাই ঠিক করুন কাকে ভোট দেবেন, সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার বিমানে চেপে ঘোরা নেতাকে নাকি টালির ছাদের নীচে, হাওয়াই চটি পরা মহিলাকে, যিনি আপনাদের ১ লক্ষ শয্যা তৈরি করে দিয়েছেন।’