বিজেপিকে রুখতে ভোটের পর কি তৃণমূলের সঙ্গে জোট বাঁধতে চলেছে কংগ্রেস? এবার সেই জল্পনাই উস্কে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। নির্বাচনের পর তৃণমূলের সঙ্গে জোট বাঁধার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করলেন না—অধীর। ফাঁক রেখে দিলেন তাঁর মন্তব্যে।যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এমন কোনও ‘সম্ভাবনার’ প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, তৃণমূল একাই সংখ্যাগরিষ্ঠতায় অনেক বেশি আসন পাবে। তাছাড়া অধীরবাবুরা নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা থেকে একথা বলছেন।
বুধবার কথার ভাঁজে এমনই সুক্ষ্ম রাস্তাই খোলা রাখলেন অধিরবাবু। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েও অধীরের তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য, ‘রাজনীতি আসলে সম্ভাবনার শিল্প।’ তাঁর এই বক্তব্যেই তিনি ঘুরপথে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ভোটের পর প্রয়োজনে সংযুক্ত মোর্চা ও তৃণমূলের যৌথ সরকার হওয়া অসম্ভব কোনও ব্যাপার নয়।
বঙ্গ রাজনীতির আলিন্দে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচক হিসেবেই পরিচিত রয়েছেন অধীর। ভোটের প্রচারে শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদীই নয়, তাঁর পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়মিত আক্রমণও শানিয়ে আসছেন অধীর। এমনকী, বুধবার সাংবাদিক বৈঠকেও মমতাকে তীব্র কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।
এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘মমতা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ও বিজেপি বিরোধী রাজনীতি সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেসকে কেন্দ্র করেই হয়। আর সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন বলেই কংগ্রেসকে চিঠি লিখছেন মমতা। কংগ্রেস কিন্তু তাঁকে কোনও চিঠি লেখেনি। এই বিষয়েই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, এই নির্বাচনে মমতা কংগ্রেসের কাছে নৈতিক ও রাজনৈতিক হার স্বীকার করেছেন।’
এরপরই ভোটের পর মমতাকে সমর্থনের প্রশ্নে তাৎপর্যপূর্ণভাবে মন্তব্য করেন অধীর। তিনি বলেন, ‘কাল্পনিক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার এটা সময় নয়। আমরা সংযুক্ত মোর্চা নবান্ন দখলের লক্ষ্যে এগোচ্ছি। সংযুক্ত মোর্চাকে কারা সমর্থন করবেন সেটা তাঁদের ব্যাপার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে গেলে কোথায় যাবেন আমরা জানি না। এমনও হতে পারে সংযুক্ত মোর্চা যখন নবান্ন দখল করতে যাচ্ছে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বাঁচার জন্য সংযুক্ত মোর্চার সঙ্গী হলেন। বা সংযুক্ত মোর্চার কাছে আবেদন জানালেন।’ এরপরই অধীরের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প।’
যদিও তৃণমূল বলছে, এমন কোনও সম্ভাবনার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, তৃণমূল একাই সংখ্যাগরিষ্ঠতায় অনেক বেশি আসন পাবে। তাছাড়া অধীরবাবুরা নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা থেকে একথা বলছেন।