বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছেন একাধিক বিধায়ক। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্ত এবং তপনের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। টিকিট না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তিনি। ফলে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও এক পুরনো সঙ্গী নদিয়ার গৌরীশঙ্কর দত্ত এবার দল ছাড়লেন। গেরুয়া শিবিরে যে তিনি যোগ দেবেন সে কথাও মানছেন নদিয়া জেলার তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক গৌরী দত্ত। তবে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকেই ছিলেন।
বুধবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান দুই নেতা। এছাড়া আজ অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত, প্রাক্তন কাউন্সিলার নাসরিন খাতুন, জেলা পরিষদের সদস্য প্রবীর দাস, প্রাক্তন কাউন্সিলার চৈতালি বিশ্বাস, অরিজিৎ ঘোষ, দেবানন্দ শর্মা, সুপ্রীতি চট্টোপাধ্যায়, রাজা রায়চৌধুরী এবং রতন বিশ্বাস পদ্মাসনে বসলেন।
গৌরীশঙ্কর অভিযোগ করেন, ‘২১ বছর আমাকে তৃণমূল কংগ্রেস সৌজন্য দেখায়নি। বিজেপিতে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করব।’ স্থানীয় সূত্রে খবর, জেলা কমিটির রাশ যখন থেকে মহুয়া মৈত্রর হাতে আসে তার পর থেকেই কোণঠাসা হয়েছেন গৌরীশঙ্কর দত্ত। বারবার প্রকাশ্যে এসেছে তাঁদের দ্বন্দ্ব। তবে দলবিরোধী কথা তাঁর মুখে খুব একটা শোনা যেত না। এবার টিকিট না পাওয়ায় প্রকাশ্যেই ক্ষোভের কথা জানালেন তিনি। ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে গৌরীশঙ্কর জানান, ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দলের জেলা এবং রাজ্যস্তরের একাধিক পদে কাজ করেছি। কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস–চেয়ারম্যান ছিলাম। তেহট্টের বিধায়ক হই ২০১৬ সালে। আর আমার সঙ্গেই অসৌজন্যতা দেখিয়ে আলোচনা না করেই প্রার্থী বাছাই হয়ে গেল। আমি টিভিতে দেখে জানতে পারলাম।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া ঝড়ে নদিয়া জেলাতেও তৃণমূল কংগ্রেসের ভিত নড়ে যায়। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হয় শাসকদলের। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হলেও তিন বিধানসভা কেন্দ্রে পিছিয়ে ঘাসফুল শিবির। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে জেলার ১৭টি বিধানসভার মধ্যে মাত্র ৬টিতে লিড পেয়েছে শাসকদল। কল্যাণী ও হরিণঘাটা দুই বিধানসভা বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত। ওই দুই বিধানসভাতেও লিড নিয়েছে বিজেপি। ২০১১ সালের ‘পরিবর্তন’–এর জমানাতেও তাঁকে তেহট্ট থেকে প্রার্থী করেন মমতা। সিপিআইএমের কাছে হেরে যান তিনি। ফের ২০১৬ সালে তেহট্ট থেকেই প্রার্থী হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী হন তিনি। কিন্তু এবার সেখানে প্রার্থী বদল করেছে শাসকদল। গৌরীশঙ্করের জায়গায় এবার তেহট্টে প্রার্থী হয়েছেন তাপসকুমার সাহাকে।