নন্দীগ্রামে আগের দিনই তাড়া খেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। গ্রামবাসীরা বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি দেখতে পেয়েই ঝাঁটা নিয়েও তেড়ে গিয়েছিলেন। স্লোগান তুলেছিলেন—চোর, চোর, চোরটা–শিশিরবাবুর ছেলেটা। আর আজ বৃহস্পতিবার প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তিনি। তার জেরে বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া। শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর।
বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দুর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুভেন্দুকে দেখানো হয় কালো পতাকা। এরপরই উত্তেজিত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি সমর্থকরা। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন। সোনাচূড়া বাজার ছাড়াও ভুতার মোড়েও মারধর, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিত। আমি পুলিশকে সব জানাব। জঙ্গলরাজ চলছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এসেছেন। তিনি দিল্লিতে জানাবেন। লুম্পেনদের নিয়ে আটকানো যাবে না। সোনাচূড়া বাজারে আমাদের যুব নেতার মাথায় লেগেছে।’ বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকরা তাদের সমর্থকদের উপরে চড়াও হয়। তাদের মারধর করা হয়। উল্লেখ্য, বুধবারও শুভেন্দু অধিকারীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় নন্দীগ্রামের মানুষজন। শুভেন্দুকে বিশ্বাসঘাতক বলে স্লোগানও দেওয়া হয়। বিক্ষোভের সময় গাড়ির ভিতরে ছিলেন তিনি। নন্দীগ্রাম–২ ব্লকের ভেটুরিয়া এলাকায় শুভেন্দুর কনভয় আটকে ঝাঁটা, জুতো হাতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।
ঠিক কী ঘটেছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, সোনাচূড়া বাজার পেরিয়ে শুভেন্দু আধিকারীর গাড়ি যখন যাচ্ছিল তখন তাঁর গাড়ির সামনে জুতো, ঝাঁটা, কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সেখানে দু’জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। পূর্ণ পাত্র নামে এক বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটে যায়। তাঁকে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে য়াওয়া হয়। ভুতার মোড়ের সংঘর্ষে এক মহিলা–সহ মোট তিনজন আহত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিন পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ফেরার পথে ভেটুরিয়ার কাছে স্থানীয় কিছু মহিলা–পুরুষ শুভেন্দুর কনভয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ‘দূর হটো’ স্লোগান দিতে থাকেন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। উত্তেজনা ছড়ালে পুলিশ ও শুভেন্দুবাবুর নিরাপত্তারক্ষীরা গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেন।
এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, শুভেন্দুর উপর ক্ষুব্ধ নন্দীগ্রাম। এই পরিস্থিতিতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। আহতদের দেখে তিনি বলেন, ‘আমাদের যুব মোর্চার কর্মীদের মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। পূর্ণ পাত্র নামে এক বিজেপি কর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেছি। বুঝতে পারছি না পুলিশ কী করছে।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর লড়াইয়ে সরগরম এই কেন্দ্র। নজরকাড়াও বটে। সেখানে নেমে এসেছে রাজনৈতিক হিংসা। তাতে আরও তপ্ত হয়ে উঠেছে নন্দীগ্রাম বলে মনে করা হচ্ছে।