বিধানসভা নির্বাচনের মুখে রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখাছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। এবার মানুষকে কাছে টানতে ছোটো সভায় বেশি করে জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ। বাংলার নির্বাচনই এবার পাখির চোখ বিজেপির। তাই ছোটো সভার পাশাপাশি বেশি সংখ্যক ভোটারের দুয়ারে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এই নির্দেশকে অনেকে 'দুয়ারে বিজেপি' বলছেন।
অমিত শাহ রাজ্য ছাড়ার আগে নাকি দলের রাজ্য নেতাদের তেমনই রণকৌশল ঠিক করে দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসলে নির্বাচনের প্রচারে যতই মিটিং–মিছিল করা হোক না কেন, মানুষের দরজায় পৌঁছতে না পারলে যে ভোটবাক্সে সোনার ফসল ফলানো যাবে না, তা ভালোই বুঝেছেন অমিত। তাই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার শহরের এক হোটেলে গভীর রাত পর্যন্ত রাজ্য নেতাদের নিয়ে বৈঠকে অমিত শাহ এই নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, স্বপন দাশগুপ্তরা। রাজ্যের সাংগঠনিক অবস্থা খতিয়ে দেখে অমিত শাহ আগামিদিনের জন্য রণকৌশলও নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, বৈঠক শেষ হয় মাঝরাতের পর। আর গভীর রাতে দিল্লি রওনা হন অমিত শাহ। অমিতের বৈঠকে নবান্ন দখলের লক্ষ্যে তৈরি কোর টিমকে ডাকা হয়েছিল। সেখানেই শাহ নির্দেশ দেন, ‘পরিবর্তন যাত্রা’-কে কেন্দ্র করে আগামিদিনে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে পৃথক পৃথক ৪২টি জনসভা করতে হবে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রেই আয়োজন করতে হবে মাঝারি মাপের জনসভা। যাতে হাজির থাকবেন দলের রাজ্য নেতারা। আর প্রতিটি বুথে পথসভা এবং ছোটো ছোটো আলোচনা সভা করতে হবে।
এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও নির্দেশ, ভোটারদের দরজায় দরজায় পৌঁছতে হবে। মানুষকে সমাবেশে না নিয়ে গিয়ে তাঁদের আরও কাছে যেতে হবে। ছোটো ছোটো সভা করতে হবে। বেশি করে জোর দেওয়া হয়েছে কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার বিষয়ে। অমিত শাহের ‘দুয়ারে বিজেপি’ নির্দেশ নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি মানুষের দুয়ারেই আছে। অমিতজি আরও বেশি করে মানুষের কাছে যেতে বলেছেন এটা ঠিক। এবার মানুষের কাছে শুধু নয়, মানুষের মনে ঢোকার কাজ চলছে।’
রাজ্য নেতাদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘চলো পালটাই’ স্লোগানকে এবার মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দিতে হবে। কেন তাঁরা পরিবর্তন চাইছেন, আগামিদিনে বিজেপি কোন পথে ‘সোনার বাংলা’ গড়তে চায় সবই বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার হাতে যে সময় রয়েছে তাতে বিজেপি নেতারা সবার দুয়ারে পৌঁছতে পারেন কিনা।