দলের টিকিট না—মেলায়, নের্তৃত্বের ওপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা আরাবুল ইসলাম। যা আচরণ করছিলেন, তাতে দলবদলের ইঙ্গিতই স্পষ্ট ছিল। সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই ক্ষোভ গিয়ে আছড়ে পড়ে। ফেসবুকে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আরাবুল লেখেন, ‘দলে আমার প্রয়োজন ফুরল।’ তবে ‘ম্যাজিক’ হল কলকাতা থেকে ফিরেই।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না—কাটতেই দলবদলের জল্পনা উড়িয়ে দিলেন তাঁরই ঘনিষ্টরা। তাঁর ঘনিষ্টমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষোভ—অভিমান দূরে সরিয়ে আপাতত দলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আরাবুল।শুধু তাই নয়, তাঁর ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, দলত্যাগ তো করবেনই না—উল্টে ভাঙড়ের প্রার্থী রেজাউলের হয়ে প্রচারেও নামতে পারেন তিনি।
প্রার্থী ঘোষণার পর ভাঙড়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই তৃণমূল নেতা জানিয়েছিলেন, আগামীতে কী করবেন, আদৌ দলে থাকবেন কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। তবে শোনা গিয়েছে, আরাবুলের ক্ষোভের বিষয়টি জানার পরই তাঁর মানভঞ্জনের জন্য কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার কলকাতায় গিয়েছিলেন আরাবুল। যদিও সাংসদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয় নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। অভিষেকের সঙ্গে কোনও সাক্ষাত হয়েছে এমন কথাও স্বীকার করেননি তিনি।
প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই মানভঞ্জন করলেন ভাঙড়ের ক্ষুব্ধ নেতার? অবশ্য তার উত্তর জানা যায়নি। এবিষয়ে আরাবুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হওয়ার পর দেখা যায়, তাতে আরাবুলের নাম নেই।টিকিট না—মেলায়, দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন আরাবুল। সেই থেকেই দলের অন্দরে তাঁর দলবদলের কানাঘুষো শুরু হয়ে যায়। হাবভাবে তা বুঝিয়েও দেন আরাবুল। তবে এখন তাঁর ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, দলত্যাগ তো করবেনই না—উল্টে ভাঙড়ের প্রার্থী রেজাউলের হয়ে প্রচারেও নামতে পারেন তিনি।
নির্বাচন এখন দোরগোড়ায়।তবে গত ৩—৪ মাস ধরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অনেক নেতারাই। আবার দলত্যাগের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। শুক্রবার প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হওয়ার পর সেই আগুনে ঘি পড়ে।অনেকের নাম না—থাকায়, নেতাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ তৈরি হয়।
ওইদিনই ভাঙড়ের প্রার্থী হিসেবে রেজাউল করিমের নাম ঘোষণা হতেই, কার্যত আগুন জ্বলতে শুরু করে ভাঙড়ে। পোলেরহাট এলাকায় নিজের পার্টি অফিসই ভাঙচুর করেন আরাবুল বলে অভিযোগ। রাস্তার সামনে অবরোধ করেন তাঁর অনুগামীরা। এরপর নিজের সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি।
উল্লেখ্য, আরাবুলের মতোই শুক্রবার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সাতগাছিয়ার বিধায়ক সোনালী গুহ, নলহাটির বিধায়ক-সহ অন্যান্য নেতারা। প্রকাশ্যে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সোনালী।