আগামী ২৬ এপ্রিল দক্ষিণ কলকাতা–সহ আরও কয়েকটি জায়গায় বিধানসভা নির্বাচন হবে। এটা অবশ্য সপ্তম দফায় পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচার চলছে দক্ষিণ কলকাতার সর্বত্র। তার মধ্যে বিশেষ নজর কেড়েছে রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্র। কারণ এখানে ত্রিমুখী লড়াই হলেও এটা তৃণমূল কংগ্রেসের গড় বলেই পরিচিত। এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন দেবাশীষ কুমার। যিনি অত্যন্ত পরিচিত মুখ এবং সকলেরই দেবা দা। বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছে প্রাক্তন কর্ণেল সুব্রত সাহাকে। আর সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে কংগ্রেস প্রার্থীর নাম আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়।
এখানে প্রচার থেকে একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় সামনে এসে পড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হেভিওয়েট হলেও লড়াই কিন্তু দিচ্ছে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী। সেখানে বিজেপিকে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। বিজেপি প্রার্থী প্রচার করছেন ঠিকই। তবে অভিনবত্বের দিক থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন। আর এবার অভিনব প্রচার করতে দেখা গেল সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়কে। যা এলাকায় বেশ চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বয়স্ক নাগরিককেই দেখা যাচ্ছে এই তরুণ প্রার্থীকে কাছে ডাকতে।
কী সেই অভিনব প্রচার? সর্দার শঙ্কর রায় রোড থেকে যে রাস্তাটা লেক মার্কেটের দিকে যাচ্ছে সেখানে দেখা গেল প্রার্থী আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়কে। গরীব মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষদের মুখে মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন মোর্চার প্রার্থী। বয়স্ক নাগরিকদের হাতে হাত রেখে বলছেন, পাশে থাকব কথা দিচ্ছি। যুবক–যুবতীদের বলছেন, বাংলাটা বাঁচাতে হবে। আপনারা এগিয়ে আসুন। এই মাস্কেই লুকিয়ে রয়েছে অভিনবত্ব। এক, সেই মাস্কে প্রার্থীর নিজের ছবি দেওয়া আছে। দুই, তা তিনি নিজে পরিয়ে দিচ্ছেন প্রার্থী। আর তিন, করোনা নিয়ে সচেতন করছেন অলিতে–গলিতে মাস্ক পরিয়ে দিয়ে।
প্রার্থীর ছবি দেওয়া মাস্ক তৃণমূল কংগ্রেসও করেছে। কিন্তু মানুষের মুখে পরিয়ে দিতে দেখা যায়নি। মানুষের হাতে অবশ্যই তুলে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি এসবের ধার ধারেনি। সরাসরি পথসভা এবং জনসংযোগে জোর দিয়েছেন। সেখানে মোর্চার প্রার্থীকে দেখা গিয়েছে এলাকায় এলাকায় মানুষের মুখে মাস্ক পরিয়ে দিতে। আর সচেতন করতে। এই বিষয়ে আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা দেওয়াল নোংরা করার পক্ষপাতী নই। বিরাট রোড–শো করে করোনা ছড়িয়ে দিতে পারব না। বরং করোনা রুখতে মানুষের মুখে মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছি। এভাবেই মানুষের পাশে থাকতে চাই।’ কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে তো তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। ফল নিয়ে কতটা আশাবাদী? সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী বলেন, ‘উনি সিনিয়র নেতা। আমি ওনাকে সম্মান জানাই। কিন্তু নির্বাচনের ময়দানে পারফরম্যান্সই শেষ কথা। আমি মানুষের পাশে আছি। মানুষ আমার পাশে আছে। তাই সম্পূর্ণ আশবাদী।’ মাস্ক পরিয়ে দেওয়ার পর্ব এগিয়ে চলল। এক বৃদ্ধা মাস্ক পেয়ে বললেন, ‘আশু ভাল থেকো।’