বামফ্রন্টে থেকে অনেকে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে জোটে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না। তাই নিয়ে ফ্রন্টের অন্দরে অনেকে উষ্মাপ্রকাশও করেছেন। বড় শরিক সিপিআইএমের সঙ্গে জোট হলেও বাকিরাও এই জোটে রয়েছেন। অর্থাৎ বামফ্রন্টের মধ্যে রয়েছেন। কংগ্রেসও জোটে রয়েছে। এরা প্রত্যেকেই আব্বাসকে নিয়ে বিরক্ত, নচেৎ অস্বস্তিতে রযেছেন। আর তাতেই ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশে আব্বাসের অংশগ্রহণ নিয়ে মুখে কিছু না বললেও পরিষ্কার দেখা গিয়েছিল বাকি নেতাদের মুখে একটা অস্বস্তির ছাপ। এমনকী এই সমাবেশ থেকে কংগ্রেসকে কড়া বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। যার জেরে মঞ্চ ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিমান বসুর হস্তক্ষেপে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এই বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বামফ্রন্টের শীর্ষ নেতা জানান, কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে ১৯৩৯ সালে ফরওয়ার্ড ব্লক তৈরি করেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। সেই দল বামফ্রন্টে রয়েছে। যারা এই ব্রিগেড সমাবেশে যেতে চায়নি। কারণ এখানে আব্বাস সিদ্দিকি আমন্ত্রিত।
এমনকী এই ইস্যুতে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি লেখেন। যা সেখানে পৌঁছে দেন ফব–নেতারা। সেই চিঠিতে আইএসএফ–এর কি ধর্মনিরপেক্ষতা রয়েছে তার প্রমাণ চাওয়া হয়। এই চিঠি পেয়ে নড়েচড়ে বসেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। তিনি নরেন চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠান এবং বোঝান ব্রিগেড সমাবেশে আসতে। তবে তাঁরা সেখানে যান। যদিও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির এক সদস্য জানান, দলের মধ্যে অনেক নেতাই আছেন যাঁরা আব্বাসের উপস্থিতি মেনে নিতে পারছেন না। কারণ তিনি একটা ধর্ম নিয়ে চলেন। এমনকী এটা মার্কসীয় নীতির সঙ্গে যায় না। তিনি আরও বলেন, ‘২০০৬ সালে জনপ্রিয় সিপিআইএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তী তারাপিঠে গিয়ে পুজো দিয়েছিলেন বলে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছিল। এবং তাঁকে তা দিতে হয়েছিল। অথচ আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাকে মক্কা যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালে রেজ্জাক মোল্লা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন।’ ঠিক একইরকমভাবে কংগ্রেস বামফ্রন্টের সঙ্গে জোটে গিয়েছে। তাদের বলা হচ্ছে আইএসএফ–কে আসন ছাড়ার জন্য। এটা দ্বিচারিতা ছাড়া আর কি? বলে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় জোট অটুট রেখে নির্বাচনে লড়াই করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।