ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দাবি, বাংলায় বিজেপি ৯৯ টি আসন পার করতে পারবে না। এই মন্তব্য নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে কম জলঘোলা হয়নি। এবার রাজ্যের গোর্খা প্রধান এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রচার করছেন বিমল গুরুং। ডুয়ার্সে প্রচার শুরু করেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা। তিনি আগেই বলেছিলেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করবে তাঁর দল। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তিনি তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চান। এবার প্রচারে পিকের সমীক্ষার নিচে তিনি নামিয়ে দিলেন বিজেপির আসন সংখ্যা।
মেটলি ব্লকের চিলোনি চা–বাগান থেকে নিবিড় জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করলেন তিনি। আর সেখানেই তিনি দাবি করলেন, ‘বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৭০ থেকে ৮০–র বেশি আসন পাবে না বিজেপি।’ এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই আরও চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। কিসের ভিত্তিতে তিনি এই সংখ্যা প্রকাশ্যে আনলেন তা অবশ্য খোলসা করেননি। অথচ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্য নেতৃত্বকে ২০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস থেকে হেভিওয়েট বিধায়ক–সাংসদরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাহলে এত কম আসন কেন পাবে বিজেপি?
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুংয়ের দাবি, ‘এবার আমাদের ফল ভালোই হবে। যদিও আগের মতো হবে না। তবে সরকার আমরাই গড়ব। বিজেপি জিতবে বলে যে দাবি করছে, তা একেবারেই ভুল। ৭০ থেকে ৮০–র বেশি আসন পাবে না রাজ্যে।’ দুর্গাপুজোর আগে কলকাতায় তিনি আত্মপ্রকাশ করেন গত সাড়ে তিনবছর গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর। তারপর গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেন। আর পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে নির্বাচনে সমর্থন করার কথা জানান। যদিও বিনয় তামাং–অনীত থাপাদের সঙ্গে তাঁর পৃথক সমীকরণ তৈরি হয়েছে পাহাড়ে। সেখানে দাঁড়িয়ে এই সংখ্যা ব্যক্ত করে গুরুং আবার গেরুয়া শিবিরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বলে।
তরাই এবং ডুয়ার্সে নেপালি ভাষাভাষী এবং গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। সূত্রের খবর, এক দশকেরও বেশি সময় বিজেপির পক্ষে থাকায় মোর্চা সমর্থকদের একটা অংশ এখনও গেরুয়া ঘেঁষা বলে মনে করে গুরুং শিবির। তাই দল ও মত বদলাতে চলছে জোর প্রচার। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভাভিত্তিক ফল অনুযায়ী, কালচিনি, কুমারগ্রাম এবং নাগরাকাটা–ডুয়ার্সের এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এখন গুরুংয়ের ভরসায় উত্তরবঙ্গের ৫৪টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসনে ভালো ফলের আশা করছে ঘাসফুল শিবির।
এই বিষয়ে বিজেপি জেলা সহ–সভাপতি অলোক চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘যার জন্য ডুয়ার্স দিনের পর দিন উত্তপ্ত ছিল, সেই দাগি আসামীকে দিয়ে দিদিমণি ডুয়ার্সে প্রচার চালাচ্ছেন। দিনের পর দিন পাহাড় ছেড়ে পলাতক ছিলেন। এদের মানুষ চেনে। মানুষ এদের নেবে না। মানুষ এদের পাশে থাকবেন না।’