লোকসভা নির্বাচনে তারা উত্তরবঙ্গে গেরুয়া ঝড় তুলেছিল। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সম্পূর্ণ ভরাডুবি হল। এবার জলপাইগুড়ি হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার বর্মার কাছে হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী আইনজীবী সুজিত সিনহা। এই পরাজয়ের জন্য তিনি দায়ী করেছেন দলীয় নেতৃত্বকেই। তাঁর অভিযোগ, ‘দলের একাংশ নেতা–কর্মী ষড়যন্ত্র করে টাকার বিনিময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। আর তার জন্যই পরাজয় ঘটেছে। প্রচারে দলীয় নেতৃত্বকে পাশে পাওয়া যায়নি।’ ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ির রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব।
উত্তরবঙ্গে শক্ত ঘাঁটি করেছে বিজেপি। তার মধ্যে অন্যতম আসন জলপাইগুড়ি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা কেন্দ্রে ৪১ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। আর তাতেই আত্মতুষ্টিতে ভুগছিল গেরুয়া শিবির। তার প্রেক্ষিতেই এই পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এখানেই বিজেপি প্রার্থী সুজিত সিনহা পরাজিত হয়েছেন। এরপরই দলীয় নেতৃত্বের উপর হারের দায় চাপিয়েছেন প্রার্থী সুজিত সিনহা। তাঁর অভিযোগ, ‘শহরে জনতার ভোট পেলেও, গ্রামীণ এলাকা থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এই ফলাফল একেবারেই অপ্রত্যাশিত।’
পরাজিত প্রার্থীর এই অভিযোগকে কার্যত মান্যতা দিয়েছেন বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীও। তিনি বলেন, ‘কারা এই হারের জন্য দায়ী, তা চিহ্নিত করে জেলা থেকে রাজ্যস্তরে একটি রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। সেখানে তা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু অন্তর্ঘাত হলে, তার সঙ্গে ঠিক কারা জড়িত? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে জলপাইগুড়ি জেলার প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি দীপেন প্রামাণিকের নাম। দীপেনের সঙ্গে সুজিতের সম্পর্ক অহি–নকুল বলে চর্চিত। তাই পেছন থেকে এভাবে খেলে দিয়েছেন দীপেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে সুজিত সিনহার নাম ঘোষণা হওয়ার পরই তা অনেকে মেনে নিতে পারেননি। ফলে একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এমনকী তার জেরে ভাঙচুর, অশান্তিও হয়েছিল। পরে রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তা মিটলেও, ক্ষোভের চোরা হাওয়া বইছিল, তেমনই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে চিঠি লিখে সেসব কথাই জানিয়েছেন তাঁরা।