প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আজ, মঙ্গলবার নিজের কেন্দ্র বেহালা পূর্বে পা রাখলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বান্ধবী তথা বিজেপি নেত্রী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিকেলে বেহালার ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে ঠাকুরপুকুরের থ্রি–এ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত শোভন–বৈশাখীর রোড শো ঘিরে চোখে পড়ে উন্মাদনা। যা দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত শোভন। রোড শো থেকে বলছিলেন, ‘বেহালায় আজ লাখ লাখ মানুষের জমায়েত দেখেই বোঝা যায় যে শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজের জায়গায় ঠিক আছেন। আসলে তৃণমূল মানুষের থেকে সরে গিয়েছে।’
তৃণমূল ছাড়লেও এখনও বেহালা পূর্বের বিধায়ক পদে রয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও ছিলেন। কিন্তু তিনি তৃণমূল ছাড়ার পর ওই এলাকার দায়িত্ব তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে দেয় তৃণমূল। তাঁকে বেহালা পূর্ব ও ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কো–অর্ডিনেটর করা হয়। এদিন শোভন–বৈশাখীর রোড শো শুরুর আগে রত্না বৈশাখীকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, ‘উনি শোভনের সঙ্গে আসছেন বলে হয়তো বেহালার মানুষ ওঁকে কিছু বলছেন না। একবার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হাত ছেড়ে একা বেহালায় ঢুকে দেখান। দেখবেন বেহালার মানুষ ওঁকে কী করে!’
যদিও এদিন বৈশাখীর প্রশংসা ও রত্নাকে নিন্দা জানিয়ে শোভন বলেছেন, ‘বৈশাখী সঙ্গে রয়েছেন বলে আমি আজ বেহালায় আসতে পেরেছি। এভাবে মানুষের এত কাছে আসতে পেরেছি। না হলে মানুষ আমার অন্য পরিণতি দেখতে পেতেন।’ পাল্টা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে রত্না এদিন বলেছেন, ‘সাড়ে তিন বছর উনি বেহালার দিকে ফিরেও তাকাননি। আর এখন আসছেন পদযাত্রা করতে! উনি ওই মহিলাকে নিয়ে যত রাস্তায় নামবেন, তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট তত বাড়বে।’
এদিন প্রাক্তন স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছেন শোভন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের স্ত্রীকে যেভাবে দেখতে চেয়েছিলাম আর যেভাবে দেখেছি, তা আমার ভাল লাগেনি। কেউ তো আর শখ করে ডিভোর্স করে না। আমি ওঁর জীবন থেকে চলে গিয়েছি। আমার পিঠটা খুললে দেখবেন দগদগে ঘা। বিশ্বাসঘাতকতার ঘা।’
এদিকে, ‘ঘরে ঘরে পদ্ম, দিদিমণি জব্দ’— এই স্লোগান তুলে বৈশাখী এদিন বলেন, ‘আমরা জিতবই’। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘শুধু বেহালাই নয়, গোটা কলকাতায় তৃণমূল ফাঁকা হয়ে যাবে।’ বেহালায় উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শোভন এদিন বলেন, ‘২০১৭ সালে যা সব পরিকল্পনা করে দিয়েছিলাম সেই উন্নয়নের কাজ এখনও চলছে বেহালায়। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বেহালায় নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন, পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করেছি।’ সেই সুর ধরে বৈশাখী বলেন, ‘শোভন চট্টোপাধ্যায় হলেন আধুনিক বেহালার রূপকার। আমার মনে হয়, বিজেপি টিকিট দিলে তাঁর বেহালা পূর্বেই দাঁড়ানো উচিত।’