‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’— ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে এই বার্তা দিয়ে নতুন প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এবার সেটাকেই হাতিয়ার করে পাল্টা দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার হুগলির ডানকুনির সভায় তিনি বলেন, ‘ইনি বাংলার মেয়ে নন। ইনি হলেন বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের ফুফু আর রোহিঙ্গাদের খালা। এটাই হল বাস্তব। তাই এই সরকারকে উপড়ে ফেলতে হবে।’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে শুভেন্দুর বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘মদের বোতলে আড়াই টাকা করে ভাতিজা ভেট দিতে হয়।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘উনি নাকি বাংলার মেয়ে! পশ্চিমবঙ্গের মহিলাদের যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে তাঁর নাম হল মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এত মদের দোকান, পাড়ায় পাড়ায় চায়ের দোকান, পানের দোকানে পাউচ। যুব সমাজ, শ্রমিক সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছেন।’ সম্প্রতি পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইলেকট্রিক স্কুটারে চেপে নবান্নে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘ব্যাটারিচালিত স্কুটি নিয়ে বেরিয়েছেন। বলছেন, বাংলাকে গুজরাট হতে দেব না। কিন্তু ওই স্কুটি তো তৈরি হয় গুজরাটে। ওটা দেখে ওঠা উচিত ছিল। মোদীজির স্কুটি চড়ছে, গুজরাটের স্কুটি।’
একাধিক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করে এসেছেন যে তাঁর সরকার গত ১০ বছরে দেড় কোটি–দু’কোটি কর্মসংস্থান করেছে। সেই কথা উল্লেখ করে শুভেন্দু এদিন চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ‘১ কোটি চাকরি দিলে হিম্মত থাকলে তাঁদের নাম–ঠিকানা দিয়ে প্রকাশ করুন যে এদের চাকরি দেওয়া হয়েছে।’ ডানকুনির সভায় শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আপনাদের এখানকার সাংসদ তো পাউচ ছাড়া থাকেন না। নাচতে নাচতে বক্তৃতা করেন।’ মদন মিত্রের নাম উল্লেখ না করে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘একুশ মাস সারদায় জেল–খাটা আর একটা জোকার এখন মঞ্চে কুমড়ো দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
বিজেপি নেতার অভিযোগ, ‘একটার পর একটা স্লোগান বাংলাদেশ থেকে ধার করে নিয়ে আসছেন নেত্রী। প্রথম স্লোগান দিলেন ‘জয় বাংলা’। শেখ মুজিবর রহমান বলেছিলেন। তার পর বলা হচ্ছে ‘খেলা হবে’। এই স্লোগান দিয়েছেন বাংলাদেশের আওয়ামি লিগের নারায়ণগঞ্জের সাংসদ শামিম ওসমান।’ শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, ‘প্রথমে শুরু হল ‘দিদিকে বলো’। কটা লোক ফোন করেছেন? কী সুবিধা পেয়েছেন? বন্ধ হয়ে গেছে ‘দিদিকে বলো’।’
তৃণমূলের ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে শুভেন্দুর প্রশ্ন, ‘কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার গর্ব হতে যাবেন? বাংলার গর্ব যদি কেউ হয় তবে তা ‘বর্ণপরিচয়’–এর স্রষ্টা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হবেন, স্বামী বিবেকানন্দ হবেন, চৈতন্যদেব, কাজি নজরুল ইসলাম, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হবেন। তার পর কয়েকদিন আগে শুরু হল ‘দিদির দূত’। উপরে দাঁড়িয়ে তোলাবাজ ভাইপো। ‘দুয়ারে সরকার’ নিয়ে এল। আমরা বললাম ‘যমের দুয়ারে সরকার’। আর এখন সবাই বলছে ‘দুয়ারে সিবিআই’।’