দু’বছরের হোমওয়ার্ক, ২ মাসের ঝোড়ো ভোটপ্রচারের পরেও পশ্চিমবঙ্গে মমতার ক্যারিশ্মায় ধরাশায়ী হওয়ার মুখে বিজেপি। প্রবণতা খুব বেশি না বদলালে রাজ্যে ফের একবার ক্ষমতায় আসতে চলেছে তৃণমূল। এই অবস্থায় মুখ ভার দলের নেতাকর্মীদের। সঙ্গে অপ্রত্যাশিত এই ফলের জন্য শুরু হয়েছে দোষারোপের পালা। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের দাবি, অত্যাধিক কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপেই পশ্চিমবঙ্গে হারতে হয়েছে বিজেপিকে।
সরকার গঠন তো দূরে থাক, পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটের ফলের ছায়ামাত্র রক্ষা করতে পারেনি বিজেপি। প্রাথমিক ট্রেন্ড অপরিবর্তিত থাকলে জোর ১০০টা আসন পেতে চলেছে তারা। কিন্তু কেন হল এমন বিপর্যয়। এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি নেতারা। দিল্লি ও কলকাতা দুই জায়গাতেই শুনশান দলের কার্যালয়।
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পর ফের একবার বড় হারের মুখ দেখতে চলেছে বিজেপি। কিন্তু কেন এমন অপ্রত্যাশিত ফল? বিজেপির রাজ্য নেতাদের কথায়, এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ অত্যাধিক কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত হয়েছে দিল্লিতে। সেখানে রাজ্যের নেতারা হাজির থাকলেও বহুক্ষেত্রে দলীয় কাঠামোর জন্য তাদের মত তেমন গুরুত্ব পায়নি।
এক বিজেপি নেতার কথায়, বিহার বা গুজরাতের মানুষের স্বপ্নের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বপ্ন এক ভাবলে ভুল হবে। তাছাড়া ভোটপ্রচারে লাগাতার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে চাপা পড়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের নেতারা। লোকসভা নির্বাচনে তাদের দেখে মানুষ ভোট দিলেও বিধানসভায় তার প্রভাব পড়েনি।
এছাড়া প্রার্থীবাছাইকেও দায়ী করেছেন অনেকে। তাদের দাবি, প্রার্থীবাছাইয়ের ক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে যোগদানকারীরা বিশেষ প্রাধাণ্য পেয়েছে। যার ফলে দলের কর্মীরা বহু জায়গায় নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে যারা বিজেপির মুখ হিসাবে এলাকায় পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন তাদের বদলে তৃণমূলের মুখকে গ্রহণ করেনি মানুষ।
বিধানসভা নির্বাচনে এমন ভরাডুবির পর রাজ্যে দলের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কিত অনেকে। তারা মনে করছেন বহু নেতা-কর্মী তৃণমূলে ফিরতে পারেন। যার ফলে রাজ্যে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে। এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে তারা সবাই।