শুক্রবার রাতেই বিমানে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। শনিবার নদিয়ায় বিজেপি–র রথযাত্রা, যার পোশাকি নাম ‘পরিবর্তন যাত্রা’ সূচনা করবেন তিনি। এবং এর পাল্টা বাইক র্যালি করার কথা ঘোষণা করেছে জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গিয়েছে, প্রায় ১০ হাজার বাইক ও ট্যাবলো নিয়ে বিশাল র্যালি করবে যুব তৃণমূল সদস্যরা। আর একইদিনে, একই জায়গায় শাসক ও বিরোধীর এই দুই কর্মসূচিকে ঘিরে বড়সড় অশান্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ নবদ্বীপ থেকে দু’দিন ব্যাপী পরিবর্তন রথযাত্রার সূচনা করবেন ডে পি নড্ডা। শনিবার ও রবিবার মিলিয়ে নদিয়া জেলার ১৫টি বিধানসভা এলাকায় গড়াব বিজেপি–র এই রথের চাকা। আর একই সময় ওই ১৫টি বিধানসভার মধ্যে ৮টি বিধানসভা এলাকায় একই রুট ধরে যাবে তৃণমূলের বাইক মিছিল। বিজেপি–র কর্মসূচির মতো তৃণমূলও তাদের পাল্টা কর্মসূচির নামকরণ করেছে। এই বাইক র্যালির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জনসমর্থন যাত্রা’।
স্বাভাবিকভাবেই দুই বিরোধী রাজনৈতির দলের কর্মী–সমর্থকরা একই রাস্তায় সামনাসামনি চলে এলে একটা অশান্তির সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। তা ছাড়া দুটি বিরাট মিছিলের জেরে ট্রাফিক সমস্যা দেখা দেবেই। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক জেলা পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘নদিয়ার বিভিন্ন এলাকা–সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি থেকেও বহু লোক এই দুটি কর্মসূচি অংশ নেবে। আর তার জেরে জেলায় বিভিন্ন এলাকায় যানজটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমাদের প্রধান চিন্তা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক নিয়ে।’
কৃষ্ণনগরের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি জয়ন্ত সাহা সাফ জানিয়েছেন, ‘সেই জানুয়ারি মাসে আমাদের কর্মসূচির পরিকল্পনা এবং ঘোষণা করা হয়। অনেক আগে থেকেই পুলিশ–প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুমতি নেওয়া রয়েছে। আর বিজেপি তো হালে অনুমতি চেয়েছে পুলিশের কাছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে ১৪ জানুয়ারি আমরা কৃষ্ণনগরে ‘সমন্বয় যাত্রা’ করেছিলাম। সেদিনই আমরা ঘোষণা করি যে ৬ ফেব্রুয়ারি ৮টি বিধানসভা এলাকায় আমরা ‘জনসমর্থন যাত্রা’ করব। আমরা যা করছি সেটাই অনুসরণ করছে বিজেপি। যদিও ওদের কোনও জনসমর্থন নেই।’
জয়ন্তর কথায়, ‘আমরা শনিবার সকাল ১০টায় চাপড়া থেকে দু’দিন ব্যাপী বাইক র্যালির সূচনা করব। গত ১০ বছরে রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান ও সাফল্য তুলে ধরতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ট্যাবলো নিয়ে আমরা ১০ হাজার বাইকের মিছিল করব। ঐতিহাসিক একটা কর্মকাণ্ড হতে চলেছে শনিবার।’ তাঁর কটাক্ষ, ‘নড্ডা একজন বহিরাগত। কিন্তু আমাদের এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অন্য শীর্ষ নেতৃত্বের আসার প্রয়োজন নেই। তৃণমূল যুব নেতাকর্মীরাই নড্ডাকে সামলে নিতে পারবে।’
এদিকে, বঙ্গ বিজেপি–র প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য পরিষ্কার জানিয়েছেন, ‘জে পি নড্ডার রোড শো–তে যদি কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তা হলে তার দায় বর্তাবে জেলা প্রশাসনের ওপর। আমরা যা করছি সেটাই নকল করছে তৃণমূল। তাই বাইক র্যালির আয়োজন।’ উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বর ডায়মন্ড হারবারের শিরাকোলে কর্মিসভায় যাওয়ার পথে জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা চালানো হয়। বেশ কয়েকটি গাড়ির কাঁচ ভাঙে। আহত হন কৈলাস বিজয়বর্গীয়–সহ অনেকেই। সেই ঘটনার পর ফের নড্ডার কর্মসূচিকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নদিয়ায়।