মৈনাক দাস
নন্দীগ্রামকে ঘিরে এমনিতেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। হবে নাই বা কেন, এই কেন্দ্র থেকেই এখন মুখোমুখি লড়াইয়ের ময়দানে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁরই এক সময়ের সতীর্থ তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরই মাঝে নন্দীগ্রামে শহিদ দিবস পালনকে ঘিরে দু'পক্ষের মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে উঠল। এতদিন ধরে ১৪ মার্চের নন্দীগ্রাম দিবস পালন করত ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। এর রাশ থাকত তৃণমূলের হাতে। এবার সেখানে ভাগ বসাল বিজেপিও। তাও আবার শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে। ভোটের আগে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এই কর্মসূচি পালনের সুযোগ ছাড়তে নারাজ ছিল দু'পক্ষই।ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই উত্তপ্ত হয়ে ও্ঠে। দু'পক্ষকেই শুনতে হয় গো ব্যাক স্লোগান।
নন্দীগ্রামে শহিদ বেদিতে মালা দিয়ে তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু অধিকারী পরিবারের নাম না করেই বলেন, ‘২০০৭ সালে কোনও নির্দিষ্ট পরিবারকে এখানে দেখা যায়নি। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ নীল-সাদা শামিয়ানা টাঙিয়ে কীর্তনের মাধ্যমে শহিদদের স্মরণ করেন ব্রাত্য বসু, পুর্ণেন্দু বসু, দোলা সেনরা। কর্মসূচি সেরে ফিরে যাওয়ার সময়ে তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ করে গো ব্যাক স্লোগান দেন বিজেপি কর্মীরা। তবে এতেও তাদের এই কর্মসূচি থেমে থাকেনি। ভাঙাবেড়ায় প্রতিরোধ কমিটির শহিদ বেদিতে মালা দেন তৃণমূল নেতারা। গোটা কর্মসূচিতেই ছিলেন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শেখ সুফিয়ান সহ আরো অনেকে।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এই কর্মসূচি পালনের সুযোগ ছাড়তে নারাজ বিজেপি। তৃণমূল সমর্থকরা যতই তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘মীরজাফর’ বলে আখ্যা দিক না কেন, তৃণমূলকে জমি ছাড়তে চান না শুভেন্দু। পুরনো স্মৃতি উস্কে দিয়েই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘যাঁদের নন্দীগ্রামের মানুষ এখন দেখতে পাচ্ছেন, গত কয়েক বছর তাঁদের দেখা যায়নি। আগামী বছরেও তাদের দেখা যাবে না।’ একই সঙ্গে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘যে সরকার অরুণ গুপ্ত, তন্ময় রায়চৌধুরীর মতো আধিকারিকদের পদোন্নতি করে, তাদের শহিদ দিবস পালন করার অধিকার নেই্।’ যদিও নাম না করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগ এনেছে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি।