বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর মুখে শোনা গিয়েছিল বামেদের প্রশংসা। শোনা গিয়েছিল, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্তুতি। আসলে বামেদের ভোট রামে ট্রান্সফার করতেই তিনি এই পথ নিয়েছিলেন। এবার তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাত করতে ব্রিগেড থেকে ডাক দিয়েছে বামেরা। আর বামেদের ভোট ঘাসফুলে জুড়তে বাঁকুড়ায় তাদের সমর্থন প্রার্থনা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কারণ জঙ্গলমহলে তৃণমূল কংগ্রেসের মাথাব্যথা বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এখানে ভাল আসন পেয়েছিল।
এখানে বিজেপির ভোট বেড়েছিল, আর কমেছিল বামেদের ভোট। অর্থাৎ সরাসরি বামেদের ভোট ট্রান্সফার হয়েছিল রামে। তা যদি না হতো তাহলে বাংলার ১৮টি আসন বিজেপি পেত না। এবার যাতে সেটা রোখা যায় তাই বামেদের ভোট তৃণমূল কংগ্রেসে এসে পড়ুক চান রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাই বাঁকুড়ার ছাতনা বিধানসভা এলাকার ইন্দপুরে পদযাত্রা করে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বামেদের উদ্দেশ্যে সরাসরি সমর্থনের আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘যদি বামপন্থী হয়ে থাকেন তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিন। তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিন। তা না হলে নিজের দলকেই দিন। দয়া করে ভোট ট্রান্সফার করবেন না।’ অর্থাৎ বামেদের ভোট যাতে রামে গিয়ে না পড়ে তা আটকাতেই এমন মন্তব্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
উল্লেখ্য, পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেরা প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আর গত লোকসভা নির্বাচনে তা নেমে আসে ৭ শতাংশে। সুতরাং ভোট ট্রান্সফার হয়েছিল বিজেপিতে তা পরিষ্কার। ওই দুই ভোটে বিজেপির, ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে পৌঁছে যায় ৪০ শতাংশে। যা কপালে ভাঁজ ফেলে শাসকদলের। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে ব্রাত্য বসু সরাসরি বামেদের ভোট প্রার্থনা করে বসলেন। যা এককথায় নজিরবিহীন।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগে বলেছিলেন, সিপিআইএম বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। আর ওরা সিপিএমকে প্রচুর টাকা দিয়েছে। এই বোঝাপড়ায় ওদের ২থেকে ২০ শতাংশ গিয়েছিল বলেই বিজেপির ৩৭ শতাংশ হয়। আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিআইএমের অনেকে বিজেপিতে যোগ না দিয়েও আমাদের সাহায্য করেছিলেন। এবার তাদের দলে নিতে হবে। এখন দেখার বিষয়, বামেরা ঠিক কী করে, বিজেপির কী হাল হয়। আর তৃণমূল কংগ্রেস এখানে ঘাসফুল ফোটাতে পারে কিনা। সবকিছুর উত্তর মিলবে আগামী ২ মে।