করোনাভাইরাস রুখতে একগুচ্ছ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রাজনৈতিক সমাবেশে বা যে কোনও ধরনের জমায়েতে নির্বাচন কমিশনকে কোভিড বিধি যথাযথভাবে পালন করানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন কী কী উদ্যোগ নিল, সেই নিয়ে সাতদিনের মধ্যে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এমনকী বিধিভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধেও কমিশনকে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতেও নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
মঙ্গলবার মামলার নির্দেশ দিতে গিয়ে আদালত জানিয়েছে, কমিশনের করোনা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট যে প্রোটোকল রয়েছে, তার মধ্যে থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে বেশ কয়েকটি বিধি পালন করতে হবে প্রত্যেককে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল, জমায়েতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, স্যানিটাইজারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে, ভিড়ে নিরাপদ দূরত্ব পালন করতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে পুস্তিকা বিলি—সহ মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্দেশ দিতে গিয়ে আদালত আরও জানিয়েছে, কমিশনকে এটা খেয়াল রাখতে হবে, এই বিধিগুলো উপেক্ষা করে কেউ যাতে কোথাও জমায়েত করতে না পারেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে আদালত জানিয়েছে, যে প্রার্থীরা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা যেখানেই ভোটের প্রচার করতে যান না কেন, এই বিধিগুলো তাঁদের কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এছাড়াও প্রার্থীকেই খেয়াল রাখতে হবে যে, কোনও জমায়েত কিংবা ভোট প্রচারের সময় কেউ এই বিধিগুলোর উপেক্ষা করছেন কি না। তাছাড়াও সমস্ত জেলার জেলাশাসক, মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের উপর দায় বর্তাবে, যাতে প্রশাসনিক সমস্ত দফতরগুলোয় কোভিড বিধি ঠিকঠাকভাবে পালন করা হচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখতে হবে তাঁদেরই। প্রার্থীদের মাস্ক পরার নির্দেশ দেওযা হযেছে{
দেশের অন্য রাজ্যগুলির পাশাপাশি ভোট বঙ্গেও করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। রাজ্যে নির্বাচন চলাকালীন কোভিড প্রোটোকল শিকোয় তুলে প্রচার চলছে। মামলাকারীর তরফে আইনজীবী অরিন্দম দাস জানিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যে আট দফায় বিধানসভা নির্বাচন চলছে। মামলাকারীর মতে, বুথের বাইরে কিংবা যাঁরা নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত নন, তাঁদের করোনা বিধি পালনে বাধ্য করানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন।
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সরকার এখন কেয়ারটেকারের মতো ভূমিকা পালন করছে। এই মুহূর্তে কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই সরকারের। ফলে, একটা ফাঁক তৈরি হয়েছে। আগামী ২ মে নতুন নির্বাচনের ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হবে না। সেজন্য এই সমস্যা মেটাতে এখনই হস্তক্ষেপ করুক আদালত। হাইকোর্টের তত্বাবধানে একটি কমিটি তৈরি করে গাইডলাইন বেঁধে দেওয়া হোক। যাতে যে হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তার থেকে সাধারণ মানুষ বাঁচতে পারেন৷ এতে নির্বাচন কমিশনের হাত আরও শক্ত হবে।’