অন্য থেকে নাম লিখিয়েই মিলছে পদ। কিন্তু ব্রাত্য দীর্ঘদিনের নেতাকর্মীরা। তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভের মাত্রা। শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়া সাংগঠনিক স্তরে নাম ঘোষণা করে দেওয়ারও খবর মিলেছে। সেই পরিস্থিতিতে দলের শীর্ষ পদাধিকারীদের বিশেষ বার্তা দিল বিজেপি। ‘আজকাল’-এর প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দলের জেলা সভাপতিদের একটি চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর অনুমোদন ছাড়া জেলা কমিটি, মণ্ডল সভাপতি, মণ্ডল কমিটি, বিধানসভার আহ্বায়ক, সহ-আহ্বায়ক, বুথ সভাপতি স্তরে কোনও সাংগঠনিক রদবদল করা যাবে না। অর্থাৎ বার্তাটা স্পষ্ট, দলের একেবারে শীর্ষস্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনওরকম পদক্ষেপ করতে পারবেন না জেলা সভাপতিরা।
কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে এরকম বার্তা কেন দেওয়া হল? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোটের আগে বিজেপির বহর ক্রমশ বাড়ছে। তৃণমূল কংগ্রেস, বাম, কংগ্রেস থেকে পদপ্রত্যাশীদের ভিড় বেড়ে যাচ্ছে। এমনকী একসময় যে নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁদের অধীনেই কাজ করতে হচ্ছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের। পদ ‘ভাগাভাগি’-ও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার ফলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আদি-নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব চওড়া হয়েছে। বিষয়টি বিজেপির লঘু করেও দেখানোর চেষ্টা করলেও দলের অন্দরে যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে, তা স্পষ্ট। তাই শীর্ষ নেতৃত্বের হাতেই দলের রাশ রাখতে বিজেপির তরফে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে মনে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। একইসঙ্গে বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ সংগঠনের তালিকা প্রস্তুত করে ফেলেছিলেন। পরে তা বাতিল করে দেন দিলীপ। তার জেরে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে। বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি সেরকম বিড়ম্বনা এড়ানোর জন্যও সেই পদক্ষেপ করেছে বলে একাংশের মত। যদিও চিঠির বিষয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে মুখ খোলা হয়নি।
বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বিজেপির অন্দরে কোনও সংঘাত নেই। শীর্ষস্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনও রদবদল হয় না। যদিও বা হয়, তা একেবারেই হাতেগোনা ক্ষেত্রে হয়। তবে চিঠির বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন শমীক।