চন্দননগর কেন্দ্রে এবারে তৃণমূলের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইন্দ্রনীল সেন। এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন দীপাঞ্জন গুহ। অন্য দিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন সিপিআইএমের গৌতম সরকার।
একসময় চন্দননগর ছিল ফরাসি উপনিবেশ। কলকাতার মতো চন্দননগরেও আছে স্ট্র্যান্ড, বড়বাজার, বাগবাজার, বউবাজার। ফরাসি আমলে চন্দননগরের প্রভূত উন্নতি হয়। রাস্তাঘাট, নিকাশি সবেতেই ফরাসি দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। ফরাসি উপনিবেশ হওয়ায় স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বিপ্লবীরা এখানে আশ্রয় নিতেন। আলিপুর বোমার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে অরবিন্দ ঘোষ ও অন্যান্য বিপ্লবী এখানে আশ্রয় নেন। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের কর্মীরা, বিপ্লবী গনেশ ঘোষ, অনন্ত সিংহ, শহীদ জীবন ঘোষালরাও এখানে আত্মগোপন করে ছিলেন একসময়। ফরাসি উপনিবেশ, তাই ব্রিটিশ পুলিশকে অনুমতি নিয়ে এখানে ঢুকতে হত। সেই সুযোগে বিপ্লবীরা পালাতেন। শহিদ কানাইলাল বসুর শৈশব কেটেছে এই শহরে। তার ভিটে, নামাঙ্কিত একটি বিদ্যালয় ও ক্রীড়াঙ্গন এই শহরে রয়েছে। বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর পৈতৃক ভিটে এই শহরে ফটোকগোড়া এলাকায়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধিকবার এই শহরে এসে থেকেছেন। তার স্মৃতিবিজড়িত পাতালবাড়ি স্ট্রান্ডের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত। তাঁতবস্ত্রের কেন্দ্র হিসেবেও চন্দননগরের নামডাক ছিল। চন্দননগরের আরেক নাম ফরাসডাঙা। এখানকার কাপড়ের খ্যাতি অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।
ভারতের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে ১৮৯ নম্বর চন্দননগর বিধানসভা কেন্দ্রটি চন্দননগর পৌরসংস্থা ও ভদ্রেশ্বর পৌরসভার অন্তর্গত। চন্দননগর বিধানসভা কেন্দ্রটি ২৮ নম্বর হুগলী লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন জয়ী হয়েছিলেন৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭৫ হাজার ৭২৭৷ দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী গৌতম সরকার। তাঁর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৭৩ হাজার ৬১৩৷ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সিপিএম প্রার্থী গৌতম সরকারকে ২ হাজার ১১৪ ভোটে পরাজিত করেন।