বাংলা নিউজ > ভোটযুদ্ধ > পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন 2021 > গৃহবন্দি ছত্রধর মাহাতো, জঙ্গলমহল এলাকায় ভোট প্রচার নিয়ে দুশ্চিন্তায় তৃণমূল

ছত্রধর মাহাতোকে এবার বিধানসভা নির্বাচনে তুরুপের তাস করবে বলে ঠিক করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই তাঁকে জঙ্গলমহলে দলের রাজ্য সম্পাদকের পদে বসানো হয়েছিল। এখানে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করেছিল। আর তৃণমূল কংগ্রেস এখানে তেমন কিছু দাগ কাটতে পারেনি। তাই সামনে নিয়ে আসা হয়েছিল ছত্রধরকে। কিন্তু সেই ছত্রধরের ভাড়ার গাড়ি টেনে নিয়েছে লালগড়ের পুলিশ–প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে লালগড়ের আমলিয়া গ্রামের বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। কিন্তু দুয়ারে যে নির্বাচন!‌ ফোনেই চেষ্টা করছেন সংগঠনের কাজ করতে বলে সূত্রের খবর।

এমন এক সময়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তার জেরে ঝাড়গ্রাম জেলায় একাংশ নেতা–কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন বলে সূত্রের খবর। কারণ অনেকেই আশা করেছিলেন এবার প্রার্থী হবেন। কিন্তু তা না হতে পেরে তাঁরা ক্ষোভের কথা ছত্রধরকে জানিয়েছেন বলেও খবর। এখানেই শেষ নয়, দলের টিকিট পাওয়া প্রার্থী পছন্দ হয়নি অনেকের। তাহলে ঘরবন্দি ছত্রধর কী অন্য কোনও সমীকরণ তৈরি করছেন?‌ উঠছে প্রশ্ন।

জানা গিয়েছে, ছত্রধর যে ভাড়ার গাড়িতে চড়েন, সেটি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি টেনে নিয়েছে পুলিশ। দলের ভেতরের খবর, ছত্রধরকে প্রার্থী করার একটা ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তাঁর উপর ইউএপিএ মামলা থাকায় জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে তাঁর প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে। এই প্রতিকুল পরিস্থিতিতে স্ত্রী নিয়তিকে প্রার্থী করতে দরবার করেছিলেন ছত্রধর। কিন্তু সেটাও হয়নি। সেখানে সদ্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া সাঁওতালি অভিনেত্রী বীরবাহা হাঁসদা প্রার্থী হয়েছেন। গোপীবল্লভপুরে প্রার্থী হয়েছেন চিকিৎসক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। আর নয়াগ্রাম কেন্দ্রে এই নিয়ে তৃতীয়বার টিকিট পেলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দুলাল মুর্মু। আর বিনপুরে প্রার্থী হয়েছেন জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ–সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা। আর এখানেই আপত্তি আছে ছত্রধরের।

তাঁর পছন্দের একজন প্রার্থীকেও টিকিট দেওয়া হয়নি। তবে দেবনাথ হাঁসদার সঙ্গে মোটের উপর সম্পর্ক ভাল তাঁর। বাকি প্রার্থীদের মেনে নেওয়া বেশ কঠিন। কিন্তু নিজে মুখে তা বলতে পারছেন না। অথচ ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় তাঁকেই প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছত্রধর অবশ্য বলছেন, ‘আমি ভাড়ার গাড়ি চড়ি। সেই গাড়ি নিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। তাই বাড়িতে আছি। দল থেকে প্রচারে ডাকলে অবশ্যই যাব।’

সূত্রের খবর, ছত্রধরের অতীতের ছায়াসঙ্গী লালগড় ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শ্যামল মাহাতোর মতো জেলার অনেক নেতারাই ক্ষুব্ধ প্রার্থীদের নিয়ে। এই প্রার্থীদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। মনোনয়নের বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাও হয়। তাঁদের সঙ্গে ঠিক কী কথা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খোলেননি কেউ। ছত্রধরের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল কিনা এবং তাঁরা কি তথ্য দিয়ে এসেছেন তা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে বাস্তব সমস্যাটা তুলে ধরা হয়েছে।

বন্ধ করুন