আজ দোলযাত্রার পূণ্যতিথি। তবে তিনি থেমে নেই। বাংলাকে রঙিন করে তোলার স্বপ্ন নিয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন এক জেলা থেকে আর এক জেলায়। পায়ে আজও প্লাস্টার। সঙ্গী সেই হুইল চেয়ার আর অদম্য সাহস। হ্যাঁ, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর রবিবার সোহমের হয়ে সভা করতে এসে চণ্ডীপুরে মমতা বলেন, ‘আগামী ২ মে বাংলায় আর একটা দোলযাত্রা হবে। সবুজ আবিরে দোল যাত্রা হবে। খেলাটা মা–বোনের ওপর ছেড়ে দাও।’
প্রতিটি সভার মতো এদিনও উঠে এল গদ্দারদের কথা। তীব্র আক্রমণ শানিয়ে মমতা বলেন, ‘নন্দীগ্রাম তো চণ্ডীপুর দিয়েই যেতে হয়। জমি আন্দোলনের সময় আমাকে এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে রেখেছিল। যারা আজ বড় বড় কথা বলছে। তাদের সেদিন আমি পাইনি। আমি ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। মীরজাফর গদ্দাররা বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। আমি খারাপ কথা বলি না। কিন্তু আজ বললাম। এমনি ভোটে জেতার ক্ষমতা নেই। বাপ, ছেলে, জ্যাঠারা ভোট লুঠ করেছে। জ্যাঠার ছেলে টাকা দিয়েছে সেদিন। ধরা পড়েছে। গ্রেফতার করেনি যদিও।’
ক্রমেই বাড়ল তেজ। ততক্ষণে ভরে গিয়ে সভার চারদিক। রোদ পড়ে গিয়ে হালকা হাওয়া দিচ্ছে তখন। আর সেই গ্রামীণ প্রাকৃতিক হাওয়াকে সঙ্গী করে তৃণমূল সুপ্রিমো তোপ দাগলেন, ‘জলঢোরা ভেবে কেউটে পুষেছিলাম। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে বাপ, ব্যাটা ছিল না। বাপ–ব্যাটার অনুমতি ছাড়া পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না। সব কিছু না জেনেই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম নন্দীগ্রামে। আমি ভালোবাসা দিয়েছিলাম। জানতাম না কেউটে, গোখরো বেরোবে। এত বড় ক্রিমিনাল কান্ড করে জানতাম না। মনে রাখবেন আমারও চোখ আছে। এই জেলায় কি হবে দেখব। কারণ আমার দোষ, আমি বড় বড় গদ্দার, মীরজাফর পুষেছি এখানে। ভাবছে দিল্লির দালালি করে সব পাওয়া যায়।’
নিজেই এরপর স্লোগান তোলেন, ‘বিজেপির হাতে স্টেনগান, জনগণ সাবধান। বহিরাগতের হাতে স্টেনগান, জনগণ সাবধান। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সম্মান করে বলছি। তোমরা আমাদের অতিথি। গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিজেপিকে ভোট দিতে বলো না। যোগীর ভোট, মোদীর ভোট এখান থেকে হয় না। তোমরা নিজেদের কাজ করো। না হলে আমায় মুভমেন্ট করতে হবে।’ এমন হুঁশিয়ারি এই প্রথম দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।