তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর বেশ কিছু নাম বাদ পড়েছে। আবার অনেকের কেন্দ্র পাল্টে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কী তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেবেন? দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাঁরা কী অন্তর্ঘাত করবেন? প্রার্থী তালিকায় দেখা গিয়েছে, দলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় এবং অভিজিৎ দে ভৌমিক প্রার্থী হয়েছেন। আর দু’জনই গিয়ে মন্দিরে প্রণাম করে এসেছেন। সেখানে মাথাভাঙার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের ফোন বন্ধ। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বন্ধ। আবার তাঁর মেয়ে সঙ্ঘমিত্রা বর্মণের ফেসবুক পোস্ট এই সব প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, তাঁর কেন্দ্র বদলাতে পারে এই আভাস পেয়ে তিনি ক্ষুব্ধ। রাজ্য নেতৃত্বকেও তিনি জানিয়েছেন, মাথাভাঙা থেকে কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হলে, তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কিন্তু বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে কোচবিহার উত্তরেরই প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই নিয়ে ঘনিষ্ঠমহলে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে তাঁর মেয়ে সঙ্ঘমিত্রা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এবার বাবা ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না।’
এখানেই শেষ নয়, শীতলকুচি কেন্দ্রের প্রবীণ বিধায়ক হিতেন বর্মণ, মেখলিগঞ্জের অর্ঘ্য রায় প্রধানকেও এবারে দল টিকিট দেয়নি। এমনকী তুফানগঞ্জের বিধায়ক ফজল করিম মিয়াঁও টিকিট পাননি। নতুন তালিকায় নেই কোনও সংখ্যালঘু মুখ। সূত্রের খবর, আর তাই ক্ষুব্ধ নেতাদের ক্ষোভ ঠেকাতে বাড়ি বাড়ি ছুটছেন টিম পিকে’র সদস্যরা। তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন নিশীথ প্রামাণিক ঘনিষ্ঠ ছিলেন অভিজিৎ। আবার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিমের কাছের লোক। জেলার যে দু’টি আসনে লোকসভা নির্বাচনেও এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস তার একটি নিজের জন্য রাখতে পারলেন পার্থ বলে মনে করছেন অনেকে। তবে অন্যটি পেলেন অভিজিৎ।
মাথাভাঙায় গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ, তুফানগঞ্জে প্রণবকুমার দে (মানিক)—নতুন মুখ এনে জনগণের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করলেন নেতৃত্ব বলে মনে করা হচ্ছে। আবার দলের একাংশ মনে করছেন এই প্রার্থী তালিকার পেছনে পুরোপুরি হাত রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের টিমের। তাই টিকিট না পেয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা গেরুয়া শিবিরের দিকে ভিড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কোচবিহারে ৯টি আসনের মধ্যে গতবার ৮টি জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। এখানেরও সাতটি কেন্দ্রের মধ্যে তিনজন বিধায়ককে এবারে প্রার্থী করা হয়নি।