কেন্দ্রের ভ্যাকসিন নীতির সামালোচনা করায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পালটা আয়না দেখালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দিলীপবাবু বলেন, হার নিশ্চিত জেনে এখন ইস্যু বদলে শেষ চেষ্টা করছে তৃণমূল। কিন্তু লাভ হবে না।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ‘এতদিন কখনো কেন্দ্রীয় বাহিনী, কখনো নির্বাচন কমিশন, কখনো ইভিএমকে নিশানা করেছে তৃণমূল। এবার তারা হেরে গেছে বুঝে ইস্যু পালটে শেষ চেষ্টা করছে তারা। করোনা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে তৃণমূল’।
এর পরই মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় মন দেন তিনি। বলেন, ‘গত এক বছরে করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রকম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন সেটা সাধারণ মানুষ জানে। যখন প্রধানমন্ত্রী করোনা নিয়ে সতর্ক হতে বলেছিলেন তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন দিল্লি দাঙ্গা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে’।
প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকেননি বলেও অভিযোগ করেন দিলীপবাবু। বলেন, ‘এর পর করোনা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী ২টি বৈঠক ডেকেছিলেন। কোনওটাতেই যোগ দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি। এর পর চাপের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সর্বদল বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে আমি হাজির ছিলাম। সেই বৈঠকের পর কী পদক্ষেপ করা হয়েছে কেউ জানে না। লোক দেখাতে বৈঠক ডাকা হয়েছিল’।
করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকির মুখে ফেলা হয়েছিল বলে দাবি করে দিলীপবাবু বলেন, ‘PPE ছিল না বলে করোনা প্রতিরোধে রেইন কোট পরে চিকিৎসা করতে হয়েছিল চিকিৎসকদের। ডাক্তার ইন্দ্রনীল খাঁ তার প্রতিবাদ করায় তাঁকে জেলে যেতে হয়েছিল। তিনি আজ আমাদের প্রার্থী। এমনকী করোনার সঙ্গে লড়তে গিয়ে যে স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবার বিমার টাকা পায়নি। চিনের কায়দায় করোনার তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছেন উনি’।
লকডাউনে রেশন দুর্নীতির কথাও মনে করিয়ে দেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, ‘করোনার লকডাউনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী যে রেশনের ব্যবস্থা করেছিলেন তাও মানুষ ঠিকমতো পায়নি। ৫ কিলো চালের জায়গায় ৩-৪ কিলো চাল পেয়েছেন। আর ডাল তো কেউ পানইনি। সেই চাল চুরি করেছে এই পার্টির লোকেরাই’।
মনে করান শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস বলার ঘটনা। বলেন, ‘করোনার মধ্যে যখন মোদীজি শ্রমিকদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেন চালিয়েছেন সেই ট্রেন ঢোকার অনুমতি দেয়নি রাজ্য। শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী নিজে লকডাউন মানেননি। রাস্তায় গোল্লা কেটেছেন। এমনকী প্রথম যখন ভ্যাকসিন রাজ্যে এসেছিল হাসপাতাল থেকে বেশ কয়েকটা পেটি সরিয়ে ফেলেছিলেন শাসকদলের নেতারা। ওদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন কম ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে’।
দিলীপবাবুর দাবি, শেষ তিন দফায় হার থেকে বাঁচতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। তাই মহামারি নিয়ে রাজনীতি করতেও পিছপা নয় তারা।