সকাল থেকে অস্থায়ী ডেরায় বসে নজর ছিল নির্বাচনের দিকে। ভোটগ্রহণ শুরুর পর যতক্ষণে তিনি জনসমক্ষে এলেন, ততক্ষণে ছ'ঘণ্টা অতিক্রান্ত। কিন্তু বাকি ছ'ঘণ্টায় তেমন লাভ হল না। বরং তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত নন্দীগ্রামের একটি বুথেই ‘আটকে’ রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই ঘণ্টাদুয়েক থাকতে বাধ্য হলেন মমতা। তাই দিনের শেষে বাজিমাত করার ঢঙে ‘দাদার অনুগামীদের’ একাংশের ফিসফাস, তাহলে মমতাকে কি একটি বুথে ‘আটকে’ রেখে নন্দীগ্রামের অন্যত্র ‘খেলা’ দেখালেন ‘দাদা’?
বৃহস্পতিবার বেলা বাড়তেই নন্দীগ্রামে বাড়তে থাকে তৃণমূল-বিজেপির লড়াই। চড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ। নন্দীগ্রামের বয়ালের ৭ নম্বর বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ওঠে। অন্যান্য প্রান্ত থেকেও বিভিন্ন অভিযোগ আসতে থাকে। যত বেলা বাড়তে থাকে, অভিযোগের পাহাড় তত জমতে শুরু করে। একটা সময় আর রেয়াপাড়ায় নিজের অস্থায়ী ঘাঁটি বসে থাকতে পারেননি মমতা।
দুপুর একটার পর বাড়ি থেকে সোজা চলে আসেন বয়াল মক্তব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ নম্বর বুথে। যে বুথে যাওয়ার জন্য প্রায় এক কিলোমিটার আগেই গাড়ি থেকে নেমে যেতে হয় মমতাকে। আর পরের দু'ঘণ্টা সেখানেই বুথের মধ্যে আটকে থাকলেন তৃণমূলনেত্রী। সেই সময় বুথের বাইরে থেকে ‘জয় শ্রীরাম স্লোগান’ ওঠে। পালটা ‘খেলা হবে’ স্লোগান তোলা হয়। রীতিমতো সম্মুখ-সমরে অবতীর্ণ হন তৃণমূল এবং বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে যায় পুলিশ। নামানো হয় র্যাফ। কিছুক্ষণ পর পৌঁছায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। শেষপর্যন্ত প্রায় দু'ঘণ্টা পর মমতাকে বুথ থেকে বের করা হয়।
ততক্ষণে অবশ্য ঘড়ির কাঁটায় প্রায় সাড়ে তিনটে বেজে গিয়েছে। সবমিলিয়ে গাড়িতে উঠতেও চারটে গড়িয়ে যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে আর কোনও বুথে যাননি মমতা। বরং নন্দীগ্রামে তৃণমূলের কার্যালয়ে চলে যান। তা দেখেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এখানেই খেলায় মাত হয়েছে মমতা। আর ‘দাদার অনুগামীদের’ কয়েকজনের টিপ্পনি, মমতাকে এক বুথে ‘বোতলবন্দি’ করলেন দলের ডিফেন্ডাররা। আর স্ট্রাইকারের মতো ‘গোল’ করলেন ‘দাদা’।