ভোট যত এগিয়ে আসছে তত অশান্ত হয়ে উঠছে পশ্চিমবঙ্গ। খুনোখুনি, রাজনৈতিক দলগুলিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব, সঙ্ঘর্ষের ঘটনা ঘটছে আকছার। এমন সময় সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সাবধান করল নির্বাচন কমিশন। ভোটে পেশী শক্তি, অর্থের জোরে দুষ্কর্ম বা প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার কোনওভাবেই সহ্য করবে না নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এ কথাই বললেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা।
তিনি এদিন বলেন, ‘উস্কানিমূলক বক্তৃতা, পেশী শক্তি ও অর্থের অপব্যবহারের কিছু ঘটনা আমাদের নজরে আনা হয়েছে। ভোটে পেশী শক্তি, অর্থের জোরে দুষ্কর্ম বা প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার সহ্য করবে না নির্বাচন কমিশন।’ সুনীল অরোরা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারের ব্যয় পর্যবেক্ষক অর্থের ক্ষমতার অপব্যবহার রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’ একইসঙ্গে তিনি এটা মনে করিয়ে দেন যে গত লোকসভা নির্বাচনের সময় দু’জন আইএএস অফিসার, পাঁচজন পুলিশ কমিশনার ও কিছু পুলিশ সুপারকে বদলি করা হয়।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা এদিন জানান, ‘রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাঁদের বেশিরভাগই রাজ্যে আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার সঙ্গে রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা বাড়তে পারে। যার জেরে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাঁরা রাজ্যে দ্রুত কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছেন। কিছু রাজনৈতিক দল ভোটার তালিকায় অসঙ্গতির কথাও উল্লেখ করেছে।’
সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে ভোটের ডিউটি করানো যাবে না বলে এর আগে একাধিকবার দাবি করা হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকেই। সেই প্রসঙ্গে এদিন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি আশ্বাস দিয়েছেন যে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বা তার আশপাশে সিভিক ভলান্টিয়ার বা গ্রিন পুলিশদের কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে না।’ তিনি আরও জানান, রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হওয়ার পর কোনওরকম বাইক র্যালি করা যাবে না।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে এবার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। আগে ৭৮ হাজার ৮৫টি ভোটকেন্দ্র ছিল, এখন তা হয়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৯০টি। ২.০১ শতাংশ ভোটারের সংখ্যা এবার বৃদ্ধি পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৩২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৮০। এবার চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৫ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯২১ জন ভোটারের নাম। পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর ও জলপাইগুড়িতে নতুন ভোটারের সংখ্যা সর্বাধিক।