পশ্চিমবঙ্গে এদিন ছিল শেষ দফার ভোটগ্রহণ। এবং ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হতেই একে একে আসতে থাকে বিভিন্ন বুথ ফেরত সমীক্ষা। এবং প্রায় সবকটি বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের ঝুলি প্রায় শূন্য। তামিলনাড়ুতে এনডিএ বিরোধী ডিএমকে-কংগ্রেস জোট জেতার সম্ভাবনা দেখা গেলেও সেখানে কংগ্রেস জুনিয়র পার্টনার। যেই রাজ্যগুলিতে বিজেপির বিকল্প হিসেবে কংগ্রেস নিজেদের তুলে আনতে চেয়েছিল সেই অসম এবং পুদুচেরিতে হয়ত কংগ্রেস জিততে পারবে না। এক্সিট পোল বলছে, কেরলেও সিপিএম-এর কাছে হারতে চলেছে কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গেও বাম-কংগ্রেস জোটের ভরাডুবি হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। সেই ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসের ভূমিকা কী? তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
এদিন প্রায় সবকটি বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছে যে কেরলে কংগ্রেস হারতে চলেছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোট কেরলে কংগ্রেসকে আশা দেখালেও ২০২১-এ সমীকরণ ঘুরে যায়। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে কংগ্রেস কেরলে দাগ কাটতে পারেনি। এবং কেরলে রাহুল গান্ধী নিজে যেভাবে প্রচার চালিয়েছিলেন, তাতে সেরাজ্যে কংগ্রেসের হার ফের একবার রাহুল গান্ধীর 'ফেস ভ্যালু' নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
এদিকে তামিলনাড়ুতে কংগ্রেসের নৈতিক জয় হলেও রাজনৈতিক ভাবে এই জয়ে তাদের কৃতিত্ব বেশ হবে না। যদি তামিলনাড়ুতে ডিএমকে জেতে, তা হবে স্ট্যালিনের জয়। প্রসঙ্গত, ডিএমকে-কংগ্রেস জোট আলোচনা চলাকালীন স্ট্যালিনের কাছে বহুবার নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল কংগ্রেস। কতকটা আপস করেই এই জোটে থেকে যায় হাত শিবির।
এদিকে বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোট তৃণমূল-বিজেপির বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইলেও বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, জোট ফেল করছে। এই আবহে রাজ্যে কংগ্রেসের অস্তিত্ব সংকটাপন্ন অবস্থায় পৌঁছাতে পারে। পাশাপাশি প্রচার চলাকালীন কংগ্রেসের কোনও জাতীয় স্তরের নেতা সেভাবে রাজ্যে না আসা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। অভিযোগ উঠতে পারে, বিহারের মতো বাংলাতেও কি কংগ্রেস জোট সঙ্গীকে টেনে নামাল? সেক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে সর্ব ভারতীয় স্তরে উঠে আসতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদি বুথ ফেরত সমীক্ষাকে সত্যি প্রমাণিত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে তৃণমূল বিজেপিকে হারাতে পারে, তাহলে বিরোধী দলগুলির মধ্যে তাঁর গ্রহণ যোগ্যতা বেড়ে যাবে আরও কয়েক গুণ।
এদিকে অসমে কংগ্রেসের হয়ে প্রচারে দেখা গিয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীকে। তবে বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে সেখানে বিজেপি ফের সরকার গঠন করতে চলেছে। সিএএ-এনআরসির মতো ইস্যু সত্ত্বেও যদি কংগ্রেস বিজেপিকে না হারাতে পারে, তাহলে তাদের রণ কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
এদিকে পুদুচেরিতে যেভাবে ভোটের মুখে কংগ্রেসের সরকার পড়ে যায়, তাতে দক্ষিণে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তির উপর প্রশ্ন উঠেছে। বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে সেখানে এনডিএ জিততে পারে। সেক্ষেত্রে দক্ষিণে কোনও রাজ্যেই একক ভাবে সরকারে থাকবে না কংগ্রেস। এর প্রভাব দক্ষিণী রাজনীতিতে বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।