আগামী ১০ই এপ্রিল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে ভোট। রাজবংশী ভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে তৃণমূল, বিজেপি দুই শিবিরই গ্রেটারদের ভোট পেতে একেবারে মরিয়া। বুধবারও কোচবিহারের বাণেশ্বরে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মনকে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভামঞ্চে।নেত্রীর কপ্টারেও সফরসঙ্গী তিনি। আর বক্তব্য রাখতে উঠে একেবারে নেত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ বংশীবদন বর্মন।
অন্যদিকে গ্রেটারের অপর গোষ্ঠীর নেতা অনন্ত রায় যিনি তাঁর অনুগামীদের কাছে অনন্ত মহারাজ বলে পরিচিত তাঁকে ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিজেপির একাধিক সভামঞ্চে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কার্যত অন্তরালে ছিলেন।বিভিন্ন সূত্রে খবর মূলত এতদিন অসমেই ছিলেন তিনি।তবে ভোটের মুখে ফের প্রকাশ্যে তিনি। মঙ্গলবার কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে মোদীর সভামঞ্চেও উপস্থিত ছিলেন অনন্ত মহারাজ। গত শনিবার দিনহাটার সংহতি ময়দানে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের সমর্থনে আয়োজিত সভাতেও উপস্থিত ছিলেন অনন্ত মহারাজ। এমনকী মাস কয়েক আগে একেবারে অসমে গিয়ে অনন্তর সঙ্গে দেখা করেছিলেন অমিত শাহ।
সব মিলিয়ে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত গ্রেটার কোচবিহার পিপলস আ্যাসোসিয়েশন। একদিকে রাজবংশী ভোটব্যাংককে তৃণমূলের পক্ষে টানতে মরিয়া গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মন। অন্যদিকে বিজেপির পালে হাওয়া তুলতে অনন্ত মহারাজের অনুগামীরাও কার্যত ভোট ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। বিজেপির একাধিক সভাতে রীতিমতো সংগঠনের পতাকা নিয়ে সভার মাঠ ভরাচ্ছেন গ্রেটার সমর্থকরা। কিন্ত ইভিএমে তার প্রতিফলন কতটা পড়বে সেটাই বড় প্রশ্ন।
তবে এর বাইরে এই গ্রেটারেরই একাধিক পক্ষও আছে যাঁরা এই ভোটবাজারে কার্যত বিভ্রান্ত।রাজনীতির মূল বৃত্তের বাইরে গ্রেটারের দুপক্ষ যখন দুই শিবিরে বিভক্ত তখন কার্যত গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছেন একাধিক গ্রেটার নেতা, যাঁরা কোনও পক্ষেই ভিড়ে যেতে পারেননি। এই যেমন বিষ্ণু রায়। একসময় অনন্ত রায়ের গোষ্ঠীতে ছিলেন তিনি। বর্তমানে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের(জিসিপিএ) অপর এক গোষ্ঠীর সহ সভাপতি পদে রয়েছেন। গ্রেটারের প্রবীন নেতা। বুধবার সিতাই থেকে ছুটে এসেছেন কোচবিহার শহরে। ব্যাগ থেকে একগোছা কাগজ বের করলেন। গ্রেটারের এক নেতার সম্পর্কে নানা অভিযোগ লেখা সেই কাগজে।বিষ্ণু রায় বলেন, বাস্তবে ভারত ভুক্তি চুক্তি লাগু করার দাবিতে আন্দোলনের পথ থেকে সরে গিয়েছেন একাধিক গ্রেটার নেতা।ক্ষমতার প্রলোভনে কেউ বিজেপির হাত ধরেছেন, কেউ আবার তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন। কিন্ত গরিব খেটে খাওয়া, সরল সাধাসিধে রাজবংশী মানুষগুলো মানুষগুলোর প্রকৃত উন্নতির কথা কি তাঁরা ভাবছেন? উত্তরের ভোট বাজারে এই প্রশ্নটাও ঘুরছে শীতলকুচি থেকে সিতাই।