প্রথম দফা নির্বাচনের মুখে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, পুর–প্রশাসক মণ্ডলীতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের রাখা যাবে না। পুরসভার কাজকর্ম সামলানোর জন্য রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের প্রশাসক মণ্ডলীতে রাখতে হবে। নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশিকা জারি হতেই কলকাতা পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ফিরহাদ হাকিম। একইসঙ্গে কমিশনের নির্দেশ পালন করলেন তিনি। এই বিষয়ে ফিরহাদের দাবি, কমিশন নির্দেশিকার জারি করার আগেই পদত্যাগ করেছেন।
এদিকে কলকাতা–সহ রাজ্যের বেশিরভাগ পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালেই। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে স্থগিত হয়ে যায় পুরসভা নির্বাচন। তখন নগর–জীবনের পরিষেবা চালু রাখতে পুরসভাগুলিতে প্রশাসক নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। যিনি মেয়র বা চেয়ারম্যান ছিলেন, তাঁকেই প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবার ভোটের মুখে এদিন সমস্ত পুরপ্রশাসককে সরানোর নির্দেশ জারি করল নির্বাচন কমিশন। সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে প্রশাসকদের সরিয়ে পুরসভার দায়িত্ব নিতে হবে মুখ্যসচিবকে। আর তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দায়িত্ব বন্টন শেষ করতে হবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশিকার জেরে রাজ্যের ১১২টি পুরসভায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে গঠিত প্রশাসক বোর্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন সংক্রান্ত আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন এই নির্দেশিকা বহাল থাকবে। পুর প্রশাসক পদে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের থাকা নিয়ে আগেই আপত্তি তুলেছিল বিজেপি। আদর্শ নির্বাচন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কমিশনে চিঠিও পাঠায় গেরুয়াশিবির। শেষপর্যন্ত পুর প্রশাসকদের নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করল কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে খুশি বিজেপি। এই বিষয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে একশোর বেশি কর্পোরেশন এবং পুরসভায় ভোট করায়নি রাজ্য সরকার। রাজ্যবাসী নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আমরা অভিযোগ করেছিলাম। বেআইনিভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রীরা এই পুরসভা কিংবা কর্পোরেশনের মাথায় বসে ভোটকে প্রভাবিত করছেন। তাই নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিল।’ কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এখন বিজেপির হাতের পুতুল। ওরা যা বলছে, সেটাই করছে। আমাদের কোনও কথাই শুনছে না। এমন নির্বাচন কমিশন জীবনে দেখিনি।’