দলে 'বেসুরো'-দের তালিকা ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতেও ‘স্বাস্থ্যসাথী’-সহ রাজ্য সরকারের অন্যান্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের উপর ভরসা করে তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভা ভোটের বৈতরণী পার করতে পারবে বলে কলকাতার কাউন্সিলরদের বার্তা দিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, ঘাসফুল শিবিরের নেতাদের জোটবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। অবিচল থাকতে হবে নিজেদের লক্ষ্যে।
কলকাতার পুরনিগমের তৃণমূল কাউন্সিলরদের নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার একটি অডিটোরিয়ামে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন পিকে। বিধানসভা ভোটের আগে কলকাতায় তৃণমূলের প্রস্তুতি কেমন, তা ঝালাই করে নেন। বৈঠকে হাজির কয়েকজন কাউন্সিলর জানিয়েছেন, কলকাতার কয়েকটি জোনে দলের সংগঠন নিয়ে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রশ্ন করেন প্রশান্ত। ভোটের আগে তাঁর টিম বা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে কোনও সাহায্য লাগবে কিনা, সে বিষয়েও জানতে চান।
নাম গোপন রাখার শর্তে এক তৃণমূল নেতা জানান, কাউন্সিলরদের বিজেপির প্রচার কৌশলের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতে বলেছেন কলকাতার জেলা সভাপতি দেবাশিষ কুমার এবং কলকাতা পুরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। দক্ষিণ কলকাতার ওই কাউন্সিলর বলেন, ‘প্রকাশ্যে আমরা কী বলছি, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। (এই মুহূর্তে) কোনওরকম মতবিরোধ সামনে এসে যাক, তা চায় না (দলের) নেতৃত্ব।’
এমনিতে কলকাতায় এখনও সার্বিকভাবে তৃণমূলের দাপট আছে। গত লোকসভা নির্বাচনে প্রবল গেরুয়া হাওয়ার মধ্যেও কলকাতার দুটি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পতাকা উড়েছিল। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের চিন্তা বাড়িয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে কলকাতার ৫৩ টি ওয়ার্ডে পিছিয়ে ছিল ঘাসফুল শিবির। ৫১ টি ওয়ার্ডে সবথেকে বেশি ভোট টেনেছিল বিজেপি। তারইমধ্যে বিজেপিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তার জেরে আসন্ন বিধানসভা ভোটে কলকাতায় প্রস্তুতির কোনওরকম ফাঁক রাখতে চাইছে না। বিশেষত গত বিধানসভা নির্বাচনেও কলকাতার ১১ টি আসনই গিয়েছিল ঘাসফুলের দখলে। এবারও সেই রেকর্ড অক্ষু্ণ্ণ রাখতে চাইছে তৃণমূল।