জয়ী বিজেপির সত্যেন্দ্রনাথ রায়
বিধানসভা নির্বাচনে ৮৭,৫৬১ ভোট পেয়ে জয়ী বিজেপির সত্যেন্দ্রনাথ রায়। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দাস ৮৩,২৮১টি ভোট পেয়েছেন।
এই তফসিলি জাতি কেন্দ্রে এবারের তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গৌতম দাস। এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন সত্যেন্দ্রনাথ রায়। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন সিপিআইএমের নন্দলাল হাজরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মালদহ বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। ১৯৯২ সালের ১ এপ্রিল পশ্চিম দিনাজপুর জেলা দ্বিখণ্ডিত হয়ে ওই জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা স্থাপিত হয়। বালুরঘাট এই জেলার জেলা সদর। বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর এই দুই মহকুমা নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা গঠিত। আজ থেকে প্রায় ২,০০০ বছর আগেও আলাদাভাবে দিনাজপুর অঞ্চলের অস্তিত্ব স্পষ্ট হয়৷ জেলাটি পৌরাণিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে পরিপুর্ণ৷ দিনাজপুর জেলা যেমন মৌর্য গুপ্ত পাল সেন যুগের ইতিহাস বহন করছে তেমনই ইসলামের আগমন এবং বৌদ্ধ ও জৈন সময়কালীন ঐতিহ্যে পূর্ণ৷
গঙ্গারামপুর বিধানসভা কেন্দ্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এই বিধানসভা কেন্দ্রটি গঙ্গারামপুর পুরসভা, বেলবাড়ি-১, দামদামা, গঙ্গারামপুর, নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি গঙ্গারামপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক এবং আজমতপুর, অউটিনা, গুরাইল, হজরতপুর, রামচন্দ্রপুর ও রামপাড়া চেঞ্চরা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তপন সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত।এই বিধানসভা কেন্দ্রটি বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।১৭৯৩ সালে ঘোড়াঘাট অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী গৌতম দাস জয়ী হয়েছিলেন৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮০ হাজার ৪০১৷ দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন্দ্রনাথ রায়। তাঁর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ছিল ৬৯ হাজার ৬৬৮৷ কংগ্রেস প্রার্থী গৌতম দাস নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন্দ্রনাথ রায়কে ১০ হাজার ৭৩৩ ভোটে পরাজিত করেছিলেন। ২০১১ সালের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সত্যেন্দ্রনাথ রায় তাঁর নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএমের নন্দলাল হাজরাকে পরাজিত করেছিলেন।
২০০৬ ও ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএমের নারায়ণ বিশ্বাস তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের বিপ্লব মিত্রকে পরাজিত করে গঙ্গারামপুর কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন। ১৯৯৬ সালে সিপিআইএমের মিনতি ঘোষ বিজেপির আশিস মজুমদার, ১৯৯১ সালে কংগ্রেসের বিপ্লব মিত্রকে ও ১৯৮৭ সালে কংগ্রেসের আহমেদ মসলিহউদ্দিনকে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৮২ সালে আইসিএসের আহমেদ মসলিহউদ্দিন সিপিআইএমের অরবিন্দ চক্রবর্তীকে এই আসনে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৭৭ সালে সিপিআইএমের অরবিন্দ সরকার কংগ্রেসের আহমেদ মসলিহউদ্দিনকে হারিয়েছিলেন।
১৯৭১—৭২ সালে কংগ্রেসের আহমেদ মসলিহউদ্দিন এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে সিপিআইএমের অরবিন্দ সরকার এই আসনে জিতেছিলেন। তার আগে ১৯৬৭ সালে কংগ্রেসের কে. সায়েদ জিতেছিলেন। তারও আগে ১৯৬২ সালে সিপিআইয়ের মঙ্গলা কিস্কু এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৫৭ সালে গঙ্গারামপুর একটি যৌথ আসন ছিল। কংগ্রেসের লক্ষ্মণচন্দ্র হাঁসদা ও সতীন্দ্রনাথ বসু উভয়েই এই যৌথ আসনে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে দেশের প্রথম নির্বাচনে কংগ্রেসের সতীন্দ্রনাথ বসু গঙ্গারামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে জিতেছিলেন।