ভেঙে একেবারে চুরমার হয়ে গিয়েছে গনি মিথ। মালদহে একটি আসনও ধরে রাখতে পারেনি কংগ্রেস। যে সুজাপুরে দাঁড়াতেন গনিখান চৌধুরী। সেই গনির গড়েও এবার ঘাসফুল ফুটেছে। গনি পরিবারের সদস্য় ইশা খান চৌধুরীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে সুজাপুর আসন থেকে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী আব্দুল গনি। শুধু সুজাপুর নয়, চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, মালতীপুর, রতুয়া, মানিকচক, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগরেও জিতেছে তৃণমূল। ১২টি আসনের মধ্যে ৮টিতেই জিতেছে তৃণমূল। কিন্তু কেন? কেন একটি আসনও পেল না কংগ্রেস?
এবার একটু পেছন ফেরা যাক, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলার একটি আসনও তৃণমূল পায়নি। লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলেও উত্তর মালদহের দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে কিছুটা এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু ২০২১এ বদলে গেল সব সমীকরণ। আসলে দলের নীচুতলার কর্মীদের মতে, এবার সংখ্যালঘু ভোট একেবারে একজোট হয়ে ঘাসফুলের প্রতীকে পড়েছে। বিজেপিকে আটকানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। সেক্ষেত্রে দলের গোষ্ঠীকোন্দল, দুর্নীতির অভিযোগ এসব বিশেষ ধোপে টেকেনি। কংগ্রেসকে দিলে ভোট নষ্ট হবে এরকম প্রচার এলাকায় হয়েছিল। যার সুফল ঘরে তুলেছে তৃণমূল।
কিন্তু এতটা ভালো ফল হয়তো আশা করতে পারেননি তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও। এই তো কিছুদিন আগেও জেলায় প্রচারে এসে তৃণমূল নেত্রী হাতজোড় করে বলেছিলেন, ‘এবার অন্তত মালদা যেন খালি হাতে না ফেরায়। শ্রোতারা চিৎকার করে সম্মতি জানিয়েছিলেন। তারপরেও মমতা আক্ষেপ করেছিলেন, ’এই আশ্বাস তো ভোটের আগে প্রতিবারই পাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোট পাই না' । না এবার আর মমতাকে খালি হাতে ফেরায়নি মালদহবাসী। কথা রেখেছেন তাঁরা। বিজেপিকে রুখতে দুহাত ভরে তৃণমূলকে আশীর্বাদ করেছেন মালদহের আমজনতা। বিজেপি এলে এনআরসি হতে পারে, তলায় তলায় এই প্রচার হয়েছিল এলাকায়। অন্যদিকে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসতে পারবে না এটাও ধরে নিয়েছিলেন অনেকেই। এর জেরেই সংখ্যালঘু ভোট একেবারে সঙ্ঘবদ্ধভাবে তৃণমূলের ঝুলিতে পড়ে। পিকের আইপ্যাকের প্রতিনিধিরাও সংখ্যালঘু এলাকায় এনিয়ে প্রচার করেছিলেন। তার সুবিধাও পেয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে বিজেপির অন্দরের কোন্দলও প্রভাব ফেলেছে ভোটবাক্সে।