এবার ধর্মীয় মেরুকরণের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, এই বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে ধর্মীয় মেরুকরণ এবং বিভাজন করছে বিজেপি। আর এভাবেই বিধানসভা নির্বাচনে ফায়দা তুলতে চায় গেরুয়া শিবির। তাই এদিন নির্বাচনী জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘আমি আমার সমস্ত সংখ্যালঘু ভাই–বোনেদের অনুরোধ করছি ভোট ভাগাভাগি হতে দেবেন না।’ ধনেখালির যেখানে মমতা সভা করেন, সেখান থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরেই এদিন ছিল নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচি। সভা থেকেই মমতা অভিযোগ তোলেন, ‘বাংলাকে বিজেপি ধর্মের নামে ভাগ করে দিতে চাইছেন। বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
ধনেখালির পাশাপাশি কুলপি এবং রায়দিঘির জনসভায় বিজেপির ‘বহিরাগত গুন্ডা’দের নিয়ে সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, নন্দীগ্রামে কী করেছে বিজেপি? গ্রামে গ্রামে গিয়ে বলেছে, তোমার মেয়েকে লুঠ করে নিয়ে যাব। তোমার বাচ্চাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাব। এরা বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে এসেছে। সব বাইরের গুন্ডা। দিল্লির পুলিশ এসে ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে গ্রামে ঢুকছে। পুলিশের পোশাক পরিয়ে, লোক ঢুকিয়ে গ্রামে গ্রামে ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু এরা ভোটের পর পগারপার হয়ে যাবে। এই বাংলায় আমরাই থাকব। এই বহিরাগত গুন্ডারা থাকবে না।’
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দু’টি সভাতেই মমতা নাম না করে আইএসএফ নেতা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। রায়দিঘিতে সংখ্যালঘুদের প্রতি তাঁর আর্জি, ‘হায়দরাবাদ থেকে বিজেপির এক বন্ধু এসেছে, ফুরফুরা শরিফের একটা চ্যাংড়াকে নিয়ে। কয়েক কোটি টাকা খরচা করে সাম্প্রদায়িক স্লোগান দিচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট ভাগাভাগির চেষ্টা করছে। কিন্তু যদি আপনারা এনআরসি, এনপিআর, সিএএ না চান, ওদের একটাও ভোট দেবেন না। ওদের একটা ভোট দেওয়া মানে, বিজেপিতে দেওয়া।’
বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ মমতা তুলেছেন কুলপির সভায়। অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমার নিজেরই খুব ঘেন্না হয়, এটা কোন বাংলায় আছি! কেন আমি দাঙ্গাবাজদের মুখ দেখব, ভাষণ শুনব। ৫০০ টাকার জন্য এদের ভাষণ শুনতে যাব? যারা এতদিন খুন করেছে, তাদের জন্য ৫০০ টাকা নিয়ে ভাষণ শুনতে চলে যাব, ছি ছি। মা–বোনেদের বলব, ওই টাকা নেবেন না, ওদের টাকা নিলে পাপ হবে।’