লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে মহুয়া মৈত্রের কাছে হেরে গিয়েছিলেন কল্যাণ চৌবে। এ বার মানিকতলা কেন্দ্রে হেভিওয়েট সাধন পাণ্ডের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন কল্যাণ। ম্যাচটা এ বার আরও কঠিন, মানতে নারাজ প্রাক্তন ভারতীয় গোলকিপার। বরং বলে দিয়েছেন, ‘অনেক বড় বড় ম্যাচ খেলেছি। এই ম্যাচটাও সামলে দেব। এ বার সাধন পাণ্ডকে কোনও গোলই করতে দেব না। সব গোল আটকে দেব।’
ফুটবল মাঠে বহু সাফল্য রয়েছে কল্যাণের। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে সাফল্য এখনও অধরা। তবে এই বার সব অঙ্কের হিসেব উল্টে দিতে চান কল্যাণ। কৃষ্ণনগরের ফলের পুনরাবৃত্তি যাতে মানিকতলাতেও না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক কল্যাণ। কৃষ্ণনগরের হারের জন্য তৃণমূলের রিগিং করাকেই দায়ি করেছেন মোহনবাগানের প্রাক্তন গোলকিপার। তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ‘যে ভাবে তৃণমূল রিগিং করে, সেটা বন্ধ হলে বোঝা যাবে, ওদের সাধারণ মানুষ আসলে কত ভোট দেয়। কৃষ্ণনগরের মানুষের ভোটে আমিই জয়ী ছিলাম। কিন্তু ওরা অসংখ্য বুথে বিশ্রি ভাবে রিগিং করেছিল। নয়তো ওই কেন্দ্রে আমিই জিততাম। এমনি তো জেতার দম নেই। অসৎ উপায়েই জিততে হয় তাই।’
এখানেই থেমে থাকেননি কল্যাণ। মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাষায় কথা বলছেন, সেটা কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারেন না! ভাষার কোনও লাগাম নেই। ওঁর থেকে তো ছোটরাও শিখছে, সেই ভাবনাটাও মাথায় রাখেন না। তিনি যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেটা কথা বলার সময়েও ওঁর মনে রাখা উচিত।’ এর সঙ্গেই কল্যাণ যোগ করেছেন, ‘দশ বছর ধরে তো ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। এই দশ বছরে কী কী কাজ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, তার কি কোনও খতিয়ান দিতে পারছেন? শুধু বলে যাচ্ছেন, খেলা হবে। আমিও অনেক ম্যাচই খেলেছি। বহু বড় বড় স্ট্রাইকারকে আটকেও দিয়েছি। এ বার আমিও তৈরি তৃণমূলের গোল আটকানোর জন্য।’
বিজেপি-র একমাত্র ফুটবলার প্রার্থী যেমন কল্যাণ, তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থী আবার বিদেশ বসু। বিপক্ষ দলের হলেও বিদেশ বসুকে শুভকামনা জানিয়েছেন কল্যাণ। বিদেশ বসুর প্রতি তাঁর আলাদা শ্রদ্ধা থাকলেও, তৃণমূলকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করতে পিছপা হননি মানিকতলা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। কল্যাণ বলেছেন, ‘তৃণমূল সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে দিনের পর দিন শুধু খেলা করেছে। কাজের কাজ কিছুই করেনি। সাধারণ মানুষের কোনও উন্নতি করেনি। চাকরি নেই, খাবার নেই। চারিদিকে দারিদ্র্য। শুধু নিজের লোকজনকে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করেছেন মমতা বন্দ্যোাপাধ্যায়।’
বিজেপি ক্ষমতায় এলে এবং তিনি জিতলে বাংলার খেলাধূলার উন্নতির দিকে নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন কল্যাণ। শুধু ফুটবল নয়, ছোট খেলা সহ সব ধরনের ক্রীড়ার ক্ষেত্রেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন গোলকিপার।