ভোট-পরবর্তী হিংসা নিযে রিপোর্ট 'জমা দেননি' স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ এস দ্বিবেদী। কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির রিপোর্টও 'পাঠাননি'। এমনই দাবি করে শনিবার সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
শনিবার সকালে টুইটারে ধনখড় বলেন, 'রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে ব্যর্থ হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (সরকারের) মুখ্যসচিবকে আজ সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে আমার সঙ্গে দেখা করতে তলব করেছি। গত ৩ মে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনারের রিপোর্টও পাঠাননি। যা তাঁকে গত ৩ মে পাঠানো হয়েছিল।'
তারপরই ‘ছোটো বোন’ মমতার (মমতা তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের দিন বলেছিলেন) বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ধনখড়। বলেন, 'সংবিধানে বিধিবদ্ধ প্রশাসনের নিয়ম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এরকম সরে যাওয়ার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক এবং তাতে চোখ বন্ধ করে থাকা যায় না। রাজ্য যখন সবথেকে গুরুতর ভোট-পরবর্তী হিংসার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন সাংবিধানিক প্রধানের কাছে কোনও তথ্য দেওয়া হচ্ছে না।'
উল্লেখ্য, গত রবিবার রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিআইএম মিলিয়ে প্রায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হিংসার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধেই। যদিও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা দাবি করেন, কমপক্ষে ১৪ জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া আছেন এক লাখের বেশি বিজেপিকর্মী। তা নিয়ে রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলব করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারপর বুধবারই রাজ্যকে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, দ্রুত রিপোর্ট পাঠাতে হবে। চিঠিতে রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে জানানো হয়েছে, গত ৩ মে রাজ্যের থেকে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও জবাব মেলেনি। সেই ‘দুর্ভাগ্যজনক’ কাজ থেকেই প্রমাণিত যে হিংসা বন্ধ করতে নবান্নের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই দ্রুত রিপোর্ট না পাঠালে রাজ্যের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সেই ‘হুমকির’ পর রাত পোহাতেই রাজ্যে একটি কেন্দ্রীয় দল পাঠায় অমিত শাহের মন্ত্রক।