বৃহত্তর ঝাড়খণ্ডের লক্ষ্যে এবার পশ্চিমবঙ্গের ভোটে প্রার্থী দিতে চলেছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) কার্যকরী সভাপতি তথা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বৃহস্পতিবার তিনি আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম থেকে তাঁর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বও শুরু করে দিয়েছেন। আর এই খবর পেয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘এটা অন্যায়’— এই মন্তব্য করেই এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। পাল্টা ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনেও তৃণমূল প্রার্থী দিতে পারে বলে জবাব দিয়েছেন মমতা।
এদিন ঝাড়গ্রামের জামদা সার্কাস ময়দানের সভায় হেমন্ত সোরেন অভিযোগ করে বলেন, ‘ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিসগড়— এই দুটি পৃথক রাজ্য তৈরি করে বেশ পরিকল্পিতভাবেই আদিবাসীদের ঠকিয়েছে কেন্দ্র।’ ওডিশা ও ছত্তিশগড়ের কিছু জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়াকে একসঙ্গে করে বৃহত্তর ঝাড়খণ্ড গড়ার লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন হেমন্ত সোরেনের বাবা দিসম গুরু শিবু সোরেন। এদিন সেই আন্দোলনই নতুন করে শুরু করার বার্তা দেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন মনে করিয়ে দেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের ৫ শতাংশ জনবসতি আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত।’
সভায় হেমন্ত সোরেন বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এটিই আমাদের দলের নির্বাচনী প্রচারের সূচনা। আমি আবার আসব।’ উল্লেখ্য, শুধু এবারই নয়, ২০১৬–র বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ২২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল জেএমএম। এবার তাঁরা ২৫ থেকে ৩০টি আসনে প্রার্থী দিতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, হেমন্ত সোরেনের নির্বাচনী সভার কথা কানে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর তা জানতে পেরে এদিন রাজ্যের হিন্দিভাষী জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলোচনাসভায় জেএমএমের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনের অনুষ্ঠানে দলের সুপ্রিমো মমতা বলেন, ‘এটা কী হল? আমিই প্রথম ব্যক্তি যে তাঁর (হেমন্ত সোরেন) শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম এবং তাঁকে এবং তাঁর দলের প্রতি আমার সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলাম। আর আজ তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাংলায় এসেছেন! তিনি প্রার্থী দিতে চান! এটি অন্যায়।’
বিজেপি–র বিরোধিতায় এবং তৃণমূলকে সমর্থন জানানোর আহ্বান করে একাধিক অবাঙালি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এদিন আলোচনায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মমতা আরও বলেন, ‘ঝাড়খণ্ডেও বিপুল পরিমাণ বাঙালি থাকে। তা হলে আমরাও কি সেখানে ভোট লড়তে যাব? আমাদেরও তা হলে তাই করা উচিত।’ এভাবেই এদিন হেমন্ত সোরেনকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।