সেইবারও ছিল বিধানসভা ভোট। এবারও সামনেই বাংলার ক্ষমতা দখলের লড়াই। আর কেশপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে ২০ বছরের ব্যবধানে মিলে গেলেন তৎকালীন বিরোঘী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বর্তমানে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
রবিবার বিজেপির কেশপুরের রথযাত্রা থেকে দিলীপ বলেন, 'গত বছরের সভার আগে আমি কেশপুরে ঢুকেছিলাম। কাউকে ঝান্ডা বাঁধতে দেয় না। ওখানে পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে বলে এসেছিলাম, বেশি বদমায়েশি কর, তাহলে কেশপুরকে তোমাদের (তৃণমূল) শেষপুর করব। আজ সেটাই বলতে এসেছি, কেশপুর দিয়ে আমরা শান্তিতে যাত্রা নিয়ে যেতে পারব না। কিন্তু এটাও জানি, যদি বেশি কিছু করার চেষ্টা করে, তাহলে হাত বেঁধে বসে থাকব না।'
ঠিক একই কায়দায় ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে মমতা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘কেশপুর সিপিআইএমের শেষপুর’ হয়নি। সেই সময় কেশপুরের সিপিআইএমের বিরুদ্ধে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠত। কার্যত ঘেঁষতে পারতেন না বিরোধীরা। যদিও শেষপর্যন্ত ‘সিপিআইএমের শেষপুর’ হয়নি কেশপুর। বরং এক লাখের বেশি ভোটে জিতেছিলেন বাম প্রার্থী। ২০০৬ সালেও সেই আসন ধরে রাখে সিপিআইএম। এমনকী ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনে হাওয়ায় কেশপুরে উড়েছিল লাল পতাকা। তারপর অবশ্য সেখানে ঘাসফুলের দাপট শুরু হয়। ২০১৬ সালে জেতেন তৃণমূলের শিউলি সাহা। কিন্তু তাতেও অবশ্য সন্ত্রাসের ছবি পালটায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, সিপিআইএমের সন্ত্রাসের ব্যাটন শুধুমাত্র তৃণমূলের হাতে চলে গিয়েছে। তারইমধ্যে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কেশপুর বিধানসভা থেকে প্রায় ৯০,০০০ ভোটে এগিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী দেব।
তবে এবার কেশপুরকে পাখির চোখ করছে বিজেপি। বিশেষত শুভেন্দু অধিকারী গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ায় কিছুটা হলেও সুবিধা পেয়েছেন দিলীপরা। তাতে ভর করেই ‘কেশপুরকে' তৃণমূলের 'শেষপুর’ করার ডাক দিয়েছেন তিনি। তবে সেই হুঁশিয়ারির মতো ভোটের ফলাফলেও মমতার সঙ্গে তাঁর মিল হয় কিনা, তা সময় বলবে।
তবে দিলীপের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, বাম জমানার কেশপুরের বিষয়ে কিছু জানেন না। তাই এসব মন্তব্য করছেন। অন্যদিকে সিপিআইএমের প্রাক্তন সাংসদ শমীক লাহিড়ির দাবি, একই ভাষায় কথা বলছে তৃণমূল এবং বিজেপি। দু'দলেরই একই রুচি।