প্রাথমিক ভাবে পিছিয়ে পড়েও জিতলেন বিজেপির তারকা প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। এই কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রদীপ সরকার।
খড়্গপুর সদরের বিজেপির প্রার্থী হলেন অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। এই কেন্দ্রে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রদীপ সরকার। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন কংগ্রেসের রীতা শর্মা। আগে সমীর রায়কে প্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের ক্ষোভের জেরে প্রার্থী বদল করা হয়।
মেদিনীপুর বিভাগের একটি জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর। ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলাকে দু’ভাগে ভাগ করে এই জেলা স্থাপিত হয়। এই জেলায় তিনটি মহকুমা রয়েছে খড়্গপুর, মেদিনীপুর সদর ও ঘাটাল। খড়্গপুর সদর এই জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র।
এই আসনে বিজেপির তরফে প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে অনেক জল্পনা ছিল। মনে করা হচ্ছিল দিলীপ ঘোষই ফের এই আসনে লড়তে পারেন। আবার এক তৃণমূল ছাড়ার আগেই স্থানীয় নেতার নামও ভাসছিল। কিন্তু যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে এই আসনের টিকিট দেওয়া হয় অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে। সদ্য তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
রেলশহর খড়গপুর সদরে বরাবরই কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৬২ সালে এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন জ্ঞান সিং সোহনপাল। তারপর থেকে প্রায় ১০ বারের বিধায়ক ছিলেন তিনি। সেই জ্ঞান সিং ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে হারিয়ে জিতেছিলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। আচমকা কংগ্রেসের এই ঘাটি ভেদ করে দিলীপের এই উত্থান নজর কেড়েছিল সকলের। প্রায় ৬,০০০ ভোটে কংগ্রেসকে হারিয়েছিলেন দিলীপ। একই ট্রেন্ড বজায় থাকে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেও। প্রায় ৪৭,০০০ ভোটের লিড পেয়েছিলেন দিলীপ। কিন্তু তার কয়েকমাসের মধ্যেই উলটপুরাণ হয়। দিলীপ লোকসভায় জিতে সাংসদ হওয়ায়, খড়্গপুর সদরে উপনির্বাচন হয়। তাতে তৃণমূলের কাছে হেরে যায় বিজেপি। তৃণমূল পায় ৭২,৪২৪ ভোট। বিজেপি পায় ৫১,৬১৩টি ভোট। বাম-কং জোট প্রার্থী পান ২২,৫৩০ ভোট। তাই এবারও দিলীপকে ওই কেন্দ্র থেকেই টিকিট দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা চলছিল।
উল্লেখ্য, রেল শহরে ঘাসফুল ফোটাতে ২০১৯ উপনির্বাচনে শুভেন্দুকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষে শুভেন্দুই তৃণমূল প্রার্থীকে জেতাতে অনেক কাজ করেছিলেন বলে খবর। কিন্ত এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিল। শুভেন্দু এখন বিজেপিতে। ফলে রেল শহরের রাজনৈতিক সমীকরণ দ্রুত বদলে গিয়েছে।