‘বন্দেমাতরম, জয় হিন্দ, জয় বাংলা’— রাজনৈতিক সভা হোক বা কর্মিসভা বা নেতাজি জন্মজয়ন্তীর মতো সরকারি অনুষ্ঠান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই এই তিন স্লোগানেই শেষ করেন তাঁর ভাষণ। আর তার মধ্যে সম্প্রতি ‘জয় বাংলা’–তে বেশি জোর দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এবার এই স্লোগান আরও জনপ্রিয় করে তুলতে নতুন নিদান দিলেন তিনি।
বুধবার রায়গঞ্জে সভা করার পর মুখ্যমন্ত্রী যান মালদার সভায়। সেখানেই সভার একেবারে শেষে স্লোগান দেওয়ার সময় জনতার উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘রোজ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বলবেন জয় বাংলা।’ শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেছেন, ‘ফোনে হ্যালো না বলে বলবেন জয় বাংলা।’ এর পরই সভা থেকে পরপর তিনবার ‘জয় বাংলা’ আওয়াজ ওঠে।
ভিক্টোরিয়ায় নেতাজি জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানের প্রতিবাদে বক্তব্য রাখেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ‘জয় হিন্দ’ ও ‘জয় বাংলা’ বলে তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদমূলক বক্তব্য শেষ করেন। আর মমতার সেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকেই হাতিয়ার করে তাঁকে আক্রমণ করেন বিজেপি–র আইটি সেলের প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি–র সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য।
তিনি একটি টুইটে লেখেন, ‘গতকাল ‘পিসি’ স্লোগান তুলেছিলেন ‘জয় বাংলা’। তিনি কি জানেন এটা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ছিল? শেখ মুজিবুর রহমান যে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাতে ব্যবহার করা হয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের।’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তাই অমিত মালব্যর প্রশ্ন, ‘মমতা কার কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইছেন?’
যদিও ‘জয় বাংলা’ যে বাংলাদেশি স্লোগান এমন দাবি সে দেশ থেকেও করা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই এই মন্তব্য করে তৃণমূলের রোষের শিকার হয়েছেন অমিত মালব্য তথা বিজেপি নেতৃত্ব। এবার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকেই আরও জনপ্রিয় করে তুলতে নতুন নিদান দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোজ সকালেবেলা ঘুম থেকে উঠে এবং ফোনে হ্যালোর জায়গায় জয় বাংলা বলে রাজ্যের জনগণ ‘দিদি’র কথা রাখবেন কিনা সেটাই দেখার। বিজেপি–র ‘জয় শ্রী রাম’–এর পাল্টাই কি তৃণমূলের ‘জয় বাংলা’? এই প্রশ্নই এখন অনেকের মনে।