একেবারে বাছাই করা বিশেষণ। শয়তান, বাচাল, মীরজাফর, চ্যাংড়া। সোমবার এর সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে আক্রমণের সেই পরিচিত শব্দবন্ধ,'গদ্দার'। একের পর এক তির ছুঁড়ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিশানায় ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা তথা আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকি। উত্তরবঙ্গে প্রচারে গিয়ে সম্প্রতি আব্বাসকে নাম না করে ‘বাচাল’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন মমতা। দক্ষিণবঙ্গে ফিরে এসেই সেই আক্রমণের সুর একেবারে সপ্তমে। শনিবার রায়দিঘির সভাতে তিনি বলেছিলেন, ওদের ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। রবিবার আমতার সভা থেকে মমতার হুঙ্কার, কোনও এক বাচাল ছেলে বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ করার চেষ্টা করছে। ওর জামানত বাজেয়াপ্ত করে দিতে হবে। আর সোমবার তৃণমূল নেত্রীর দাবি, ফুরফুরা শরিফ থেকে গদ্দার বেরিয়েছে।
তবে এতসব কিছুর পরেও দমবার পাত্র নন আব্বাস সিদ্দিকি। আমতার সভা থেকে ভাইজানের দাবি, উনি বলছেন আমি ফুরফুরার কেউ নই।এই বাংলার মানুষ যাঁরা ফুরফুরাকে ভালোবাসেন, এই কথা তাঁদের আঘাত দেবে, কি দেবেনা? আরও প্রশ্ন তুলেছেন আব্বাস, খোদ মমতা বলছেন গদ্দাররা আছে, তাই ২৩০ আসন পেতে হবে। আপনি নিজেই যাদের গদ্দার বলছেন তাঁদের ভোট দি কি করে? তার সঙ্গেই আব্বাসের সংযোজন, আমায় বলছে সাম্প্রদায়িক। তা হলে আমার কাকা কী? সিদ্দিকুল্লা কী? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে তৃণমূলকে চাপে রাখতে ভোটের মুখে একেবারে মোক্ষম প্রশ্ন তুলে দিলেন আব্বাস সিদ্দিকি।
কিন্ত কেন বার বার আব্বাসকেই নিশানা করছেন তৃণমূল নেত্রী?রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে দুপক্ষের কাছেই একাধিক বিধানসভা এলাকায় নির্ণায়ক শক্তি হতে পারে সংখ্যালঘু ভোট। এতদিন সেই ভোট ব্য়াংকের একটা বড় অংশ ছিল তৃণমূলের দখলে। এবার সেই ভোট ব্যাংকে থাবা বসাতে আসরে নেমেছেন আব্বাস সিদ্দিকি। বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ২৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফ। হুগলি কিংবা দক্ষিণ ২৪ পরগনা আব্বাসের সভাতে উপচে উঠছে ভিড়। আর এই ভিড়ই দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে তৃণমূলের। আর তার জেরেই আব্বাসকে নিশানা করে তৃণমূলের আক্রমণের সুর চড়ছে ক্রমশ। আক্রান্তও হচ্ছেন হাড়োয়ার বাম ও কংগ্রেস সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী। এমনটাই মত আইএসএফ নেতৃত্বের। কিন্ত বাস্তবের মাটিতে শেষ পর্যন্ত সংখ্যালঘু ভোট টানতে কতটা সমর্থ হয় আইএসএফ তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২রা মে পর্যন্ত।