শারীরিক যন্ত্রণা থেকে হৃদয়ের যন্ত্রণা, গণতন্ত্রের যন্ত্রণা অনেক বড়। রবিবার হুইল চেয়ারে বসে মেয়ো রোড থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা শেষে এমনটাই বললেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে মানুষের কাছে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করার ডাক দেন তিনি।
এদিন মমতা বলেন, ‘আমার জীবনে অনেক আঘাত, প্রত্যাঘাত পেরিয়ে এসেছি। কিন্তু কখনো মাথা নত করিনি। আমাকে কেউ যখন জিজ্ঞাসা করে দিদি যন্ত্রণাটা কেমন আছে? আমি বলি যন্ত্রণাটা এখন থাকবে। আমাকে তো ডাক্তার ১৫ দিন বেডরেস্ট নিতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি যদি বেড রেস্ট নিই তাহলে বাংলায় মানুষের কাছে পৌঁছবে কে? তাহলে তো যারা চক্রান্ত করে তারা সফল হয়ে যাবে। আমাকে বেরোতেই হবে। সে মনের জোর আমি আপনাদের কাছ থেকে পেয়েছি। যারা আমার খবর নিয়েছেন তাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি’।
এর পরই নিজের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘আমার যন্ত্রণা আছে। কিন্তু শারীরিক যন্ত্রণা থেকে হৃদয়ের যন্ত্রণা, গণতন্ত্রের যন্ত্রণা অনেক বড়। গণতন্ত্র যখন পদদলিত হয়... আপনারা জানেন আমি রোজ ২০ – ২৫ কিলোমিটার হাঁটি। আমার পা যখন হাঁটে মাথাও হাঁটে, হৃদয়ও হাঁটে। সারা শরীরে আমার কালো চিহ্নয় ভর্তি। কিন্তু আমি ওসব তোয়াক্কা করিনি। চিকিৎসকদের ধন্যবাদ, তারা আমাকে অনুমতি দিয়েছেন। আবার সাত দিন বাদে দেখবে। আমার সঙ্গে থাকবে একটা টিম। গণন্ত্রের যন্ত্রণা স্বৈরাচারীদের হাত থেকে তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের অনেক বেশি’।
রাজ্যের মানুষের কাছে মমতার আহ্বান, ‘অশুভ শক্তি যেন পরাজিত হয়, বিনাশ হয়। শুভশক্তির যেন উদয় হয়। বাংলাকে ঘিরে চক্রান্ত যেন নস্যাৎ হয়ে যায়’।
মমতার আশ্বাস, ‘আমাকে ভরসা রাখুন। হুইল চেয়ারে ভাঙা পায়ে সারা বাংলা ঘুরে বেড়াবো। আর খেলা হবে। নিহত বাঘের থেকেও আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর। আমাকে আহত করার যে ঘটনা ঘটেছে... নন্দীগ্রাম বাসীকে আমার প্রণাম অভিনন্দন সেলাম’।
গত বুধবার নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর এদিন প্রথম কর্মসূচি ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিনের মিছিলে অংশগ্রহণ করেন কলকাতায় তৃণমূলের তাবড় নেতা ও প্রার্থী।