শনিবারের পর ফের আজ, মঙ্গলবার রাজ্যে সফরে এসেছেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। এদিন তাঁর কর্মসূচি বীরভূমে। এদিন তারাপীঠ থেকে রাঢ়বঙ্গ জোনের ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা করবেন তিনি। আর তার আগেই এর আগের সফরে করা মন্তব্যকে হাতিয়ার করে নড্ডার বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি–র বিরুদ্ধে আনা ‘বহিরাগত’ তকমাকে এদিন কালনার সভায় আরও প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলেন মমতা।
গত শনিবার নবদ্বীপ থেকে বিজেপি–র ‘পরিবর্তন রথযাত্রা’র সূচনা করার আগে নবদ্বীপ চটির মাঠে জনসভা করেন জে পি নড্ডা। সেখানে তিনি ভরা সভায় দিলীপ ঘোষ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের উপস্থিতিতেই স্বামী বিবেকানন্দকে ‘বিবেকানন্দ ঠাকুর’ বলে বসেন। আর সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন কারও নাম না করে কালনার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে এসে চৈতন্যদেবের নামে ভুলভাল বলে গিয়েছিল। স্বামী বিবেকানন্দকে বলে যাচ্ছে বিবেকানন্দ ঠাকুর। মানে তাঁর উপাধি নাকি ঠাকুর! রবীন্দ্রনাথের উপাধি বিবেকানন্দকে লাগিয়ে দিয়েছে।’
বিজেপি–র বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্য কিছু করা তো দূরের কথা, আজ পর্যন্ত মানুষ জানতে পারল না যে নেতাজির মৃত্যুদিবস কবে।’ গেরুয়া শিবিরের হিন্দুত্ব নিয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তাঁর প্রশ্ন, ‘দুর্গাপুজো, কালীপুজো কখনও করেছে এরা? লক্ষ্মীপুজো, সরস্বতীপুজো করেছে? জানেও না। বিজেপি কীসের হিন্দু? হিন্দু ধর্মের মতো কত ধর্ম রয়েছে তাও জানে না।’ তাঁর অভিযোগ, ‘হিন্দু ধর্মের নামে কুৎসা করে বেরাচ্ছে বিজেপি।’
প্রতিবেশী বিজেপি–শাসিত রাজ্য ত্রিপুরা, অসমের উদাহরণ তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘ত্রিপুরার লোকজন বিজেপি–কে ভোট দিয়ে ভাবছে যে তারা কী ভুল করল। আজ ত্রিপুরা কাঁদছে। একটা কথাও কাউকে বলতে দেয় না। শুধু ধরে ধরে পেটাচ্ছে। অসমে এনআরসি–র জন্য ১০০ লোক মারা গেল। দিল্লিতে দাঙ্গার নাম করে কত লোক মারা গেছে কেউ জানে না। উত্তরপ্রদেশে দলিত, সংখ্যালঘু, আদিবাসী সকলের ওপর অত্যাচার হচ্ছে।’
বিজেপি–র বিরুদ্ধে মমতার আরও অভিযোগ, ‘সাংবাদিকরাও রেহাই পাচ্ছেন না। রাজদীপ সরদেশাইয়ের মতো একজন সিনিয়র রিপোর্টার একটি টুইট করেছেন। তা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। তাঁকে সেন্সর করা হয়েছে। বিজেপি পার্টি শুধু মিথ্যা কথা বলে।’